কুড়িগ্রাম জেলার ঐতিহ্যবাহী, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত প্রায় দু' হাজার একর জমি বিশিষ্ট নালিয়ার দোলায় সংসদে পাসকৃত কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রত্যাশায় কুড়িগ্রামের বিভিন্ন মসজিদে আজ জুমার নামাজ শেষে মুসল্লীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মহান আল্লাহর নিকট বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোগলবাসা ইউনিয়নের বান্ঞারাম হাজি পাড়া জামে মসজিদ, কৃষ্ণপুর সরকার পাড়া জামে মসজিদ, সেনের খামার জামে মসজিদ, সাতকুড়ার পাড় জামে মসজিদ, হাজি পাড়া জামে মসজিদ, সিতাইঝাড় জামে মসজিদ, উলিপুর উপজেলার যমুনা ব্যাপারী পাড়া জামে মসজিদ সহ কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর ও রাজার উপজেলার প্রায় শতাধিক মসজিদে এ দোয়া মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, নালিয়ার দোলা সম্পর্কে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূমিকা পালনকারী উক্ত এলাকার অধিবাসী, শিক্ষক ও সংগঠক মোঃ মুকুল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- আমরা যে সব কারনে নালিয়ার দোলায় বিশ্ববিদ্যালয় টি স্থাপনা করার দাবি জানাচ্ছি তা হলো,বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রয়োজন মান সম্মত স্থান----
ভালো যেকোন কিছু প্রতিষ্ঠা কিংবা সফল ফলাফলের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত স্থান,মান- সম্মত পরিবেশ আর যথোপযুক্ত সময়। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ইতোমধ্যেই সময় এবং পরিবেশের বিষয়টি উত্তীর্ণ হয়েছি। এখন প্রয়োজন উপযুক্ত স্থান নির্বাচন।কারণ শুধু উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ায় আজ দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যেই আবাসন, গবেষণাসহ নানা মূখী সমস্যায় জর্জরিত, উদাহরণ স্বরুপ - জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ তিব্র আবাসন সমস্যার সম্মুখীন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আজ জায়গার অভাবে ছাদ বাগানের দিকে ঝুঁকছে - যা অত্যন্ত ব্যয় বহুল এবং গবেষণার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।
সার্বিক দিক বিবেচনা করে পিছিয়ে পড়া কুড়িগ্রাম জেলাবাসী মনেপ্রানে বিশ্বাস করছে - "কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়" স্থাপনের জন্য একমাত্র উপযুক্ত স্থান হচ্ছে নালিয়ার দোলা। কারন ----
কুড়িগ্রাম সদরের আমিন বাজার (ক্যাতার মোড়) হইতে মোগলবাসা এবং রাজারহাট উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়ন ও উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত নালিয়া বিল(নালিয়ার দোলা) বিস্তৃত। অর্থাৎ এখানে তিনটি উপজেলার সংযোগ ও সমন্বয় রয়েছে।সন্ত্রাসমুক্ত, ঝামেলাহীন ও মনোরম পরিবেশ, পূর্বপাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী ধরলা নদী যা মৎস্য ও কৃষি গবেষণা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির নিয়ামক হিসাবে কাজ করবে।
জায়গাটি আয়তনে প্রায় দু,হাজার একর। এর মধ্যে খাস জমি ২০০একর এর অধিক। আর প্রায় ২৫০ একর জায়গা অনেকটা বালুময়, প্রায় অনাবাদী। দ্বি ফসলী জমি নষ্ট না করে প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য সরাসরি যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে , সেহেতু এটিই কুড়িগ্রাম জেলায় একমাত্র উপযুক্ত স্থান।
একমাত্র সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে, যা কুড়িগ্রামে আর কোথাও নেই।নৌপথে কুড়িগ্রাম থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন এলাকা মাননীয় প্রাঃ ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা রৌমারী - রাজিবপুর এবং জামালপুর জেলার সংগে রয়েছে মোগলবাসা ঘাটের মাধ্যমে সরাসরি নৌ-যোগাযোগের ব্যবস্থা।
পিছিয়ে পড়া রৌমারী আর রাজীবপুর উপজেলা বাসী বিভিন্ন সময় কুড়িগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জামালপুরের সংগে সংযুক্ত হওয়ার যে আন্দোলন করে থাকে - নালিয়ার দোলায় বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেটা আর তারা করবেন না আশা করা যায়।কুড়িগ্রাম থেকে রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার জন্য দ্বিতীয় তিস্তা সেতু চালু হলে জায়গাটি আরও উন্নত হবে! সড়ক পথের দূরত্ব কমবে প্রায় ১০০কিঃ বা তারও বেশি। ভৌগলিক দিক থেকে পিছিয়ে পরা রৌমারী ও রাজিবপুর বাসির জন্য রয়েছে যাতায়াতের অনেক সুবিধা।
অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পরা উলিপুর,চিলমারী,রৌমারী ও রাজিবপুরের জনগোষ্ঠি তথা কুড়িগ্রামের জন্য সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার উপযোগী জায়গা এটি!জায়গাটির পাশ দিয়ে একটি বৃহৎ ক্যানেল প্রবাহিত হওয়ার কারনে জলাবদ্ধতার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং শোভাবর্ধক হিসেবে কাজ করবে।স্হানটির একটি অংশ অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় স্থাপনা তৈরিতে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।
এছাড়াও স্থানটি ক্যাতার মোড় - যতিনের হাট বনাম মোগলবাসা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী এবং কুড়িগ্রাম পৌরসভার দক্ষিণে হওয়ায় চারিদিকে রয়েছে পাকা প্রশস্ত রাস্তা এবং যতিনের হাট - মোগলবাসা রাস্তার কোল ঘেঁষে রয়েছে মনোরম পরিবেশ বেষ্টিত একটি ক্যানেল বা ড্রেন। যা ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠিত দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক ভালো।দ