ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর আঘাতে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠিতে গাছ পরে বিধ্বস্ত হয়েছে বহু বসতঘর। ‘সিত্রাং’ এর তান্ডবে জেলার ৪ উপজেলায় কয়েক’শত ছোট,বড় ও মাঝারি আকারের গাছ উপরে ও ভেঙ্গে পড়েছে। ঝড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের খুটি ও স লনায় লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় জেলার অনেক স্থানেই এখনো বন্ধ রয়েছে বিদুৎ সরবারহ। বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সিত্রাং এর প্রভাবে সুগন্ধা ও বিষখালির পনি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের , ফসলি জমি ও বসতঘর। এখনও পানি বন্ধী রয়েছে অসংখ্য পরিবার। মঙ্গলবার সকাল থেকে রোদ ওঠায় অনেক ফসল ও সবজির ক্ষেত শুকিয়ে যেত শুরু করেছে। বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধিতে ক্ষেত তলিয়ে লাল শাক, ধূনে পাতা, পালন শাক, মূলা শাক, খিরাই, মূলা, পেঁপেসহ নানা প্রকারের শাক - সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। রোদ ওঠায় এ সবজি ও সফলের গাছ শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। উৎপাদিত সবজি পঁচে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য অল্পদামে বিক্রির জন্য কৃষকরা তা দ্রæত তুলে বাজারে নিচ্ছে। অনেক ক্ষেতের পেঁপে ও কলাগাছ সহ নানা ঝড়ে গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলার রাজাপুর উপজেলার পূর্ব রাজাপুর এলাকার আব্দুল লতিফ এর ছেলে রিক্সা চালক মোঃ মিরাজ বলেন, সোমবার সন্ধায় বাতাস ও বৃস্টি শুরু হওয়ার পরে আমার পরিবার নিয়ে পাশের ঘরে আশ্রয় নেই। কিছুক্ষণ পরে আমার ঘরের উপড় একটি বড় গাছ উপড়ে পড়ে আমার বসত ঘর দুমড়ে - মুচড়ে গেছে। আমার শেষ সম্বল বলতে আর কিছুই রইল না। এখন আমার পরিবার নিয়ে মাথা গোঁজার আর কোনো ঠাঁই রইল না।
সাংগড় এলাকার একাধিক কৃষক জানান, তাদের উৎপাদিত শাক সবজি পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন তা তুলে বাজারে নিয়ে দামমাত্র মূল্যে বিত্রæী করতে হচ্ছে। এখন না তুললে তাদের উৎপাদিত শাক সবজি পঁচে যাবে।
রাজাপুর উপজেলার ১নং সাতুরিয়া ইউনিয়ের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সৈয়দ মাইনুল হায়দার নিপু জানান, আমার ইউনিয়নে গাছ পরে প্রায় ১৫ টির মত ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। মাছের ঘের ও রবিশস্য সহ পানের বরজ এবং ছেটো বড় অসংখ্য কলা বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে এবং পুরো ইউনিয়ন বিদুৎ বিহীন অবস্থায় আছে।
নলছিটি কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম আক্তারুজ্জামান জানান, বিভিন্ন সড়কে গাছ উপড়ে পড়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ রয়েছে।অনেক বসতঘরের উপড়ে গাছ পড়ে আছে।
এখন পযন্ত ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করা যায়নি বলে জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর তান্ডবের ফলে ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপনে কাজ করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ,কৃষি বিভাগ,মৎস্য বিভাগ সহ সংশ্লিস্ট কতৃপক্ষ।