চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রোকেয়া আত্মহত্যার আগের দিন বঙ্গবন্ধু উদ্যানের সামনে তার স্বামী ধমক ও চড় থাপড় মেরেছে বলে জানা গেছে।
শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে নিজকক্ষে রোকেয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সহপাঠীরা। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তাররা রোকেয়াকে মৃত ঘোষণা করে।
এরপর থেকেই তার আত্মহত্যা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন ও তার স্বামীর বিতর্কিত আচরণ। স্বামীর দাবি, ‘পরীক্ষায় বসতে না পারায় হতাশায় ভুগছিল রোকেয়া।’
‘গর্ভপাতের কারণে পরীক্ষায় বসতে পারেনি’ বলে জানিয়েছেন তার হলের প্রাধ্যক্ষ রাকিবা নদী।
তার ছোটো ভাই মো.রুহুল আমিন বলেন, ‘রুকু অসুস্থতার কারণে চতুর্থ সেমিস্টারে তিনটি পরীক্ষা দিতে পারেনি বলে চরম হতাশায় ভুগছিলো।’
শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ রাকিবা নবী বলেন, ‘মেয়েটির স্বামী ও পরিবারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি সে পরীক্ষার সময় ৩-৪ মাসের গর্ভবতী ছিলো। ৭ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত গর্ভপাতের কারণে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলো বলে পরীক্ষা দিতে পারেনি।’
রোকেয়া ডিপার্টমেন্টের মেধাবি শিক্ষার্থীদের তালিকায় ছিলেন বলে জানিয়েছে তার সহপাঠীরা।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী জানায়, ‘ফোর্থ সেমিস্টারে ৫ টির মধ্যে ৩ টি পরীক্ষা দিতে না পারায় তার ফেল এবং ইয়ার লস নিশ্চিত ছিল। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর আবেদন করে উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে আবার পরীক্ষা দিতে পারতো।’
এ বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু মুহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘,রোকেয়া ফোর্থ সেমিস্টারে পরীক্ষা দিচ্ছিল। তাকে আমরা স্পেশালের জন্য অ্যাপ্লিকেশান করতে বলি। আমাদের আরও একজন প্রফেসর তাকে সাহায্য করবে বলে আশ্বাসও দেয়।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘ঘটনার আগের দিন বঙ্গবন্ধু উদ্যানের সামনে রোকেয়ার স্বামী রোকেয়াকে ধমকাচ্ছিল এবং থাপড় মারে।’
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘আমরা মেয়েটির স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে এই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর রোববার বিকেলে মেয়েটির লাশ তার বড় ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’