ময়মনসিংহে ৪৭ লাখ টাকার সুপারি ট্রাকে ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাঁদেরকে আদালতে তোলা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রোববার দুপুরে পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। পিবিআই জানায়, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের ঈশ্বরগঞ্জের হারুয়া এলাকায় ট্রাকভর্তি ৪৭ লাখ টাকার সুপারি ডাকাতি হয়। নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী অনুকূল পাল ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানা এলাকার ব্যবসায়ী মো.মনিরের কাছ থেকে সুপারি কিনেছিলেন।
সেই সুপারি মেসার্স জুলেখা ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে সরবরাহ করতে গিয়ে ডাকাত দলের খপ্পরে পড়ে। ট্রাকের চালক বাবুল একা ট্রাকটি চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রাইভেট কারে ছয় সদস্যের ডাকাত দল ট্রাকের সামনে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। ডাকাত দলের সদস্যরা ট্রাকে উঠে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশি দিয়ে ট্রাকচালকের হাত-পা বাঁধে এবং গামছা দিয়ে মুখ-চোখ বেঁধে ফেলে। ডাকাতেরা সম্পূর্ণ ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ট্রাক ঘুরিয়ে পুনরায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব হাজি হাসমত আলী কলেজের কাছে রাস্তায় ড্রাইভার বাবুলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে দিয়ে ট্রাক নিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় মেসার্স জুলেখা ট্রান্সপোর্টের মালিক কামাল হোসেন বাদী হয়ে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা করলে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রাকটি উদ্ধার করে। কিন্তু থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মামলাটির রহস্য উন্মোচন করতে না পারলে চলতি বছরের ৫ মার্চ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই ডাকাত দলের সদস্য বাগেরহাটের শুভ শেখকে (২৪) গ্রেপ্তার করে। ট্রাকচালকের মোবাইল ফোনসহ নারায়ণগঞ্জ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর চক্রের অপর সদস্য পটুয়াখালীর মো. বাপ্পী (৩০) ও রিগান খান (২৬) এবং চাঁদপুরের মো. মামুন প্রধানকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের সবাই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় থেকে অপরাধমূলক কাজ করতেন। তাঁদের হেফাজত থেকে ডাকাতিতে অংশ নেওয়া প্রাইভেট কারটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের ময়মনসিংহ আদালতে তোলা হলে সবাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো রকিবুল আক্তার বলেন,এটি বেশ চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা। অজ্ঞাত ডাকাত দল সুপারিভর্তি ট্রাক ডাকাতি করে নিয়ে যায়। মোট ছয়জন ডাকাত অংশ নেয়। ইতিমধ্যে ডাকাত দলের চার সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় স্বীকার করেছে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।