নরসিংদীর মনোহরদীতে মধ্যযুগীয় কায়দায় বৃদ্ধা মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মেয়ে খাদিজা আক্তারের বিরুদ্ধে। খাদিজা আক্তার উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামের প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ফালুর স্ত্রী।
জানা যায়, নির্যাতনের স্বীকার জমিলা খাতুন (৬০) উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন মাঝির স্ত্রী। জমিলা খাতুনের ঔরসজাত এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে স্বামী মৃত্যুবরণ করেন।
দুই বছর পূর্বে বাবা ও নানার দেয় জমি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মাকে খাদিজার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে। কিছুদিন যেতে না যেতেই একমাত্র বড় ভাই আসাদুজ্জামানকে বঞ্চিত করে সকল সম্পত্তি মা জমিলা খাতুনের কাছ থেকে লিখে নেয় দুই মেয়ে খাদিজা আক্তার ও তাসলিমা আক্তার।
সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর থেকেই মায়ের প্রতি শুরুহয় অমানবিক নির্যাতন। প্রতিদিনই মাকে গলায় রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে চালায় অমানবিক অত্যাচার। এভাবে সারাদিন বেঁধে রাখে গাছের সঙ্গে।
খাদিজার প্রতিবেশী জালু মিয়া বলেন, নির্যাতনের সময় বৃদ্ধার চিৎকারে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রতিবেশী বলেন, বৃদ্ধার প্রতি এমন নিষ্ঠুর অত্যাচার দেখে উদ্ধার করতে গেলে আমাদেরকে লাঠিসোটা নিয়ে মারতে আসে খাদিজা। নিষ্ঠুর অত্যাচার দেখে চোখের পানি ধরে দায়। নির্জন জঙ্গলে বৃষ্টির মধ্যে বেঁধে রাখে ও মারপিট করে। এক পর্যায়ে মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারণ করে বৃদ্ধার ছেলের কাছে পাঠানো হয়।
ছেলে আসাদুজ্জামান বলেন, আমার মায়ের উপর নির্যাতন হয়েছে তা আমি আগে জানতাম না। নির্যাতনের ঘটনা দেখে, সঙ্গে সঙ্গে মাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি ও চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। এখন থেকে মা আমার কাছে থাকবে। তিনি আরো বলেন, বোন খাদিজার সুখের কথা চিন্তা করে তার স্বামীকে বিদেশ পাঠানোর জন্য দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা দেই। কিছুদিন পর জানতে পারি মায়ের সকল জমি আমার দুই বোন লিখে নিয়ে গেছে। টাকা চাইতে গেলে খাদিজা আমাকে মামলার হুমকি দেয় ও খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান ছেলে আসাদুজ্জামান।
ঘটনার বিষয়ে জানতে খাদিজা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে খাদিজা জানান, আমার মা পাগল তাই বেঁধে রাখি।
ছোট মেয়ে তাসলিমা আক্তার বলেন, আমার মায়ের উপর এমন নির্যাতন হয় এটা আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম এখন থেকে মায়ের খোঁজখবর নিবো।
তারাকান্দী গ্রামের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী বলেন, জমিলা খাতুন একদম সুস্থ, তাকে পাগল বানিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তার দুই মেয়ের বিচার দাবি করছি।