ময়মনসিংহের ভালুকায় চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রব্বানী হত্যা মামলায় দুই কিশোরসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানাপুলিশ। ভালুকা মডেল থানা পুলিশ সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নেত্রকোনা দুর্গাপুর বারমাড়ি লক্ষীপুর গ্রামের হারুন-অর-রশিদের ছেলে কারখানা শ্রমিক সোহেল রানা (১৯), ত্রিশাল নয়া পাড়ার আবদুল মতিনের ছেলে সাব্বির হোসেন (১৯), উপজেলার দক্ষিণ হবিরবাড়ি হামিদের মোড়ের সুজন ইসলামের ছেলে মো, নাঈম (১৯), একই এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে মামুন-অর-রশিদ (১৬), শাজাহানের ছেলে মো. পারভেজ (১৯) ও জামিরদিয়া গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে রাব্বি (১৩)।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মাঝে রাব্বি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র এবং মামুন-অর-রশিদ ও মো. নাঈম দুজন মামাতো-ফুাফাতো ভাই বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হলে গ্রেফতারকৃতরা রব্বানী হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন। পাওনা টাকা, প্রেমের বিষয়সহ বন্ধুদের মাঝে মতবিরোধের জের ধরেই ওই হত্যাকাণ্ড বলে জানা গেছে। মো. রাব্বানী হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভালুকা মডেল থানার এস আই ইকবাল হোসেন আদালতের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে নিহত রব্বানীর বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ছেলে হত্যার অভিযোগে ভালুকা মডেল থানায় মামলা করেন। সোমবার মামলাটি দায়ের করা হয়। তবে এই মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি। এদিকে, মামলার দায়ের এর পরপরই অভিযান নামে থানা পুলিশ এবং এই ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভালুকা মডেল থানার এস আই ইকবাল হোসেন জানান, মাদরাসা ছাত্র রব্বানী হত্যা মামলায় প্রথমে স্থানীয় একটি কারখানা থেকে শ্রমিক রানাকে এবং তার স্বীকারোক্তি মতে অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ব্লেড ও ভিকাটম রব্বানীর খোয়া যাওয়া মোবাইলটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানায়, মাদরাসা ছাত্র রব্বানী হত্যা ঘটনা তদন্তে ৭ জনের নাম এসেছে। তাদের মাঝে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তারা সকলেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। গত রবিবার দুপুরে উপজেলার হাবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে গলাকেটে হত্যা করা হয় জামিরদিয়া আইনুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রব্বানীকে (১২)। সে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানীয়া ইউনিয়নের কাপাসিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। তারা জামিরদিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এমদাদুল হক মাস্টারের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করেন এবং বাবা মো. শফিকুল ইসলাম জামিরদিয়া মোড়ে রেডিও টেলিভিশনের মেরামতের কাজ করেন। রব্বানী তাদের একমাত্র সন্তান। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।