ময়মনসিংহের নান্দাইল সালিস করেই রক্ষা পায় দুই ধর্ষক। পৃথক পৃথক স্থানে গত দুই দিনে দুটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ধর্ষকদের সালিসের মাধ্যমেই রেহাই দিয়েছেন মাতাব্বররা। ধর্ষিতা কৌশলে এক ধর্ষককে থানায় সোপর্দ করলেও প্রভাবশালী সালিসকারীরা বিয়ের কথা বলে ছাড়িয়ে নিয়ে বাল্যবিয়ে করায় অপর ঘটনাটি দুই লাখ টাকা রফা করে আগামী এক মাসের মধ্যে বিয়ের শর্তে ধর্ষককে রক্ষা দেয়। শনিবার ও রবিবার রাতে দুটি ধর্ষন ঘটনার সমাপ্তি ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়,শনিবার রাতের ঘটনাটি উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের স্কুলছাত্রী (১৫) ক্ষেত্রে। ওই ছাত্রীকে বৃহস্পতিবার বিয়ের কথা বলে বিভিন্ন স্থানে দুই দিন রেখে ধর্ষণ করে উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের হালিউড়া গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী হৃদয় মিয়া (১৭)। একপর্যায়ে বিয়ে না করে পরে বিয়ের কথা বলে শনিবার সন্ধ্যার পর মেয়েটিকে বাড়ির সামনে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লংগারপাড় বাজারের সার ব্যবসায়ী জুলহাস মিয়ার কাছে মেয়েটি কান্নাকাটি করে ঘটনা বর্ণনা করলে জুলহাস মিয়া একটি মোবাইল দিয়ে অভিযুক্ত হৃদয় মিয়াকে ডেকে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। রাতে পুলিশ থানায় নিলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে বাইরে নিয়ে বিয়ে করার কথা বলে ছাড়িয়ে নেয়। গভীর রাতে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন যোগাড় করে সাব-কাজি দিয়ে তিন লাখ টাকার দেনমোহরে উল্লেখ করে নিবন্ধন করানো হয়। এ বিষয়টি স্বীকার করেন মেয়ের মামা আব্দুল হাকিম।
অন্যদিকে রবিবার সকালে নান্দাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর রসুলপুর গ্রামে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীর ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষণ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের বিজয়পুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে নুরে আলম (১৭)। পরে তাকে ধরে আটকে রাখে পরিবারের লোকজনরা। দিনভর আটকের পর রাতে মেয়ের বাড়িতেই সালিস বসায় স্থানীয় সালিসকারীরা। সালিসে দুই লাখ টাকা রফায় আগামি এক মাসের মধ্যে বিয়ে করবে শর্তে অভিযুক্ত ধর্ষককে রক্ষা করা হয়।
দুইটি ঘটনার ব্যাপারে নান্দাইর থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, কোনো ধরনের অভিযোগ না থাকায় থানায় আনা ছেলে মেয়েকে দুই পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর অপর ঘটনাটি সম্পর্কে কেউ কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।