ময়মনসিংহের নান্দাইলে নিজ শিশুসন্তনকে পানিতে ফেলে হত্যার কারনে মাকে আটক করেছে এলাকাবাসী । নান্দাইল উপজেলায় বাপের বাড়িতে যেতে না দেওয়ার ক্ষোভে এক মা তার এক বছরের শিশুসন্তানকে পুকুরের পানিতে ফেলে মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
আজ শনিবার সকালে স্বজনরা বাড়ির পাশের একটি পুকুরে শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখেন। আটক মায়ের নাম স্বপ্না আক্তার (২২)। তিনি উপজেলার বনাটি গ্রামের আবদুল কাইয়ুমের স্ত্রী। বাপের বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলায়।
সরেজমিনে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ শিশুটির মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছে। তখন অভিযুক্ত মা স্বপ্না আক্তারকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। শিশুটির বাবা আবদুল কাইয়ুম বলেন, শুক্রবার স্বপ্না তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। কিন্তু বাড়িতে নানা ধরনের সমস্যা থাকায় যেতে না করি। এ নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে রাতের খাবার খেয়ে দুজনই ঘুমিয়ে পড়ি। গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে দেখি স্বপ্না ও আমার সন্তান মনিরা আক্তার বিছানায় নেই। বাইরে গিয়েও তাদের সন্ধান পাইনি।
তিনি জানান, আজ শনিবার ভোরে স্ত্রীর খোঁজে তিনি শ্বশুর বাড়িসহ আশপাশে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যান। এ সময় শিশু বাচ্চা মনিরার মরদেহ পুকুরে ভাসছে বলে বাড়ি থেকে খবর পান। কিন্তু তখনও স্ত্রীর কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরে গ্রামের মুরুব্বিদের ঘটনাটি জানান। ঘটনাটি থানাকে অবহিত করেন। ইচ্ছা অনুযায়ী বাপের বাড়িতে যেতে না দেওয়ার কারণেই স্বপ্না একমাত্র সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ তার স্বামীর।
জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কাইয়ুমের বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূর মেরেঙ্গার জনতা বাজারে স্বপ্নাকে ঘুরাফেরা করতে দেখে আটক করে লোকজন। খবর পেয়ে জনতা বাজারে গিয়ে সন্তান কোথায় জানতে চাইলে স্বপ্না কোনো উত্তর দেননি। তবে বাড়ি থেকে কেন পালিয়েছেন জানতে চাইলে স্বপ্না জানান, বাড়িতে থাকলে তাকে মেরে ফেলা হবে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তার মাকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।