ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরিয়া নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে কুমড়ী গ্রামের অর্ধশত পরিবার। অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে সুরিয়ার স্রোত বেড়ে গিয়ে এই প্রবল ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সারা দেশের বিভিন্ন নদ-নদী খনন করা হলেও এ নদী খনন না করার ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে এবং আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যে। পাশাপাশি বিনষ্ট হচ্ছে বসতবাড়ি, অনেক ফসলি জমি ও রাস্তাসহ নদীপাড়ের বিভিন্ন কাঁচা-পাকা স্থাপনাস্থানীয়দের দাবি, এখনেই নদীভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা না নিলে কয়েকশ একর আবাদি ও ফসলি জমি হারাতে হবে এবং ভিটে-মাটিহীন হয়ে পড়তে হবে অর্ধশতাধিক পরিবারকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরিয়ার পানি বেড়েছে। বিশেষ করে কুশ্বাপাড়া, নয়ানগড় ও কুমড়ী গ্রামের ফসলি জমি, বসতভিটা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঈদগাহ মাঠ ও কুমড়ী গ্রামের পশ্চিম পাড়ার রাস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কয়েক দিন আগে কয়েক একর আবাদি জমিও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীপাড়ের বাসিন্দা আবুল হাসেম ও সাইফুল ইসলাম বলেন, অনেক পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নদীর পাড়ে দিন যাপন করছে। কয়েকটি পরিবারের ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় অন্যত্র নতুন বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করতে হচ্ছে।কুমড়ীর ইউপি সদস্য মো. মতিউর রহমান বলেন, আমার আবাদি জমি নদীতে, এমনকি আমার বসতঘরটির অর্ধেকের বেশিও চলে গেছে। তাই ঘরটি তাড়াতাড়ি সরিয়ে অন্য জায়গায় বাড়ি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।একই গ্রামের শামীম বলেন, এ সুরিয়ার পাড়ে আমরা অর্ধ শতাধিক পরিবার থাকি। আমাদের ফসলি জমি যা ছিল এ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
এখন বাড়িটিও নদীতে ভেঙে যাওয়ার পথে। যে জায়গায় নদীটি বাঁক নিয়েছে, সেই জায়গায় যদি ১০০ ফুটের মতো কেটে দেয়া যায়, তাহলে আমরা এ ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে পারতাম। মাওহা নয়ানগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সুরিয়ায় ভাঙনের কবলে আমার স্কুলের প্রায় তিন শতাংশের মতো রাস্তা নদীতে চলে গেছে, স্কুলটিও ঝুঁকিতে রয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ভাঙনের বিষয়ে তথ্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও ভাঙনরোধে কেউ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।নদীভাঙন প্রসঙ্গে মাওহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন স্বপন বলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ বলেন, নদীভাঙনের বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা স্কুলের শিক্ষকরা এখনও কেউ আমাকে জানাননি। তবে আমি বিষয়টি জেনে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) জানাব।এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা জানান, আমি এখনও বিষয়টি শুনিনি। তবে এখন খোঁজ-খবর নিয়ে ভাঙনের বিষয়ে বিস্তারিত জানব।