হবিগঞ্জের মাধবপুর শহরে এক ব্যক্তির প্রায় ৫ কোটি টাকার মুল্যের পুকুর দখল নিতে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক পাঠান মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখল নিতে ফারুক পাঠান তার ভাগ্নে লিটন মিয়াকে লাঠি হিসাবে ব্যবহার করছেন। আর তিনি পর্দার আড়ালে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকর করেছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক পাঠান।
মাধবপুর পৌরসভার কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল গণির ছেলে মো. দৌলত খান মোল্লা উপরোক্ত অভিযোগ করে বলেন ওয়ারিশান ও ক্রয়সূত্রে আমার সম্পত্তি নিয়ে সরকারের সাথে আমার মামলা চলছে। এই সুযোগে ফারুক পাঠান তার রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ভাগ্নে লিটন মিয়াকে দিয়ে আমার পুকুর দখলের চেষ্টা করছেন এতে থানা পুলিশও তাদেরকে সাহায্য করছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে জানান তার দখলে থাকা ১০৫ শতকের একটি পুকুর রয়েছে যা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে আবার মহামান্য হাইকোর্টের দেয়া স্থিতাবস্থার আদেশও আছে। কিন্তু ফারুক পাঠাানের ইন্ধনে লিটন মিয়া সেই পুকুরের মাছের মালিক বলে দাবি করে সদলবলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পুকুরের মাছ ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাঁধা দিতে গেলে আমার লোকজন আহত হয় কিন্তু মাধবপুর থানার ওসি লিটনের মামলা গ্রহণ করলেও দৌলত খানের মামলা নেয়নি।
পরে অপারগ হয়ে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে বর্তমানে লিটন ও তার এক সহযোগি কারাগারে আছে। গত সপ্তাহে দৌলত খানকে থানায় সালিশের কথা বলে নিয়ে মাছের দাম থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা লিটনকে দিতে বলেন, মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ রাজ্জাক, দৌলত খান জানান, ৭২৪ ও ৭২৫ নম্বর দাগে ১০৫ শতকের পুকুরটি তিনি ওয়ারিশানসূত্রে পান। পরে এই পুকুরসহ আরো ভূমি নিয়ে সরকারের সাথে মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলে।
২০১২ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তাকে উচ্ছেদের নোটিশ দেয় এর প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। হাইকোর্ট এই পিটিশনের ভিত্তিতে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। উভয়পক্ষ যে যে অবস্থায় রয়েছে, সে অবস্থা বিরাজমান থাকবে। সাথে পিটিশনের বিবাদীদের কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। কিন্তু ২০১৯ সালের আগস্টে প্রশাসন থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও হাইকোর্টের আদেশ দেখে ফিরে আসতে বাধ্য হয় এর পরপরই হাইকোর্টে একটি আদালত অবমাননার আবেদন করেন দৌলত খান।
যার ভিত্তিতে হাইকোর্ট সরকারপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয় এখনও এর কারণ দর্শায়নি প্রশাসন বলে জানান তিনি চলতি বছরের জুন মাসে তেজগাঁওয়ে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে খতিয়ান প্রকাশনার আবেদন করলে উপ-পরিচালক মো. আফজালুর রহমান প্রকাশনা স্থগিত করেন
দৌলত খানের অভিযোগ, আদালতে মামলা চলমান রয়েছে আবার মহামান্য হাইকোর্টের স্থিতাবস্থাও রয়েছে কিন্তু।
উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও আদাঐর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক পাঠান ও তার ভাগ্নে লিটন মিয়া ভূমি জবরদখল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন থানা ও উপ-পরিদর্শক এস আই ফলেরাব্বী ও মমিনুল হক। এসব করে তারা আদালত ও হাইকোর্টের প্রতি অবজ্ঞা দেখাচ্ছেন এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও আদাঐর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক পাঠান বলেন- দৌলত খান মোল্লা ও লিটন মিয়ার মধ্যে পুকুরের মাছ নিয়ে সংঘর্ষ হয়।
এ নিয়ে মাধবপুর থানার ওসিসহ এলাকার বিশিষ্ট লোকজন নিয়ে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বৈঠকে লিটন মিয়াকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেবার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু দৌলত থান মোল্লা এ সিদ্ধান্ত না মেনে বৈঠক থেকে চলে যান তিনি আরো বলেন- কিছুদিন পর নিবার্চন তাই একটি মহল আমাকে জড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করছে অভিযোগ প্রসঙ্গে মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আদালতের বিষয় নিয়ে আমাদের কোনকিছু বলার বা করার এখতিয়ার নেই।
কিন্তু এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটলে আমরা তা নিরসনের চেষ্টা করি সালিশের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমার অফিসে বিচার হলেও সেখানে মাধবপুরের দায়িত্বশীল লোকজন ছিলেন, তারা লিটন পাঠানের চিকিৎসার জন্য দৌলত খানকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।