রাবি প্রতিনিধি রায়হান ইসলামঃ
চলমান করোনাভাইরাসের প্রকোপে জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।উন্নত বিশ্বের সমস্ত শিক্ষা কার্যক্রম আজ থমকে পড়েছে। দিনের পর দিন যেন আরো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে এই মহামারি। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক হবে? এ নিয়ে কি ভাবছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন সংগঠন গুলো?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি সংস্বকৃতিক জোটের সভাপতি মুহিউদ্দিন মানিক বলেন,আমরা বিভিন্ন মারফতে জানতে পারছি।বিশ্ববিদ্যালয়গুলা খুলে দেয়া হবে। যা এই মুহূর্তে একেবারেই অনুচিত। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করা উচিত।আমরা হয়তোবা আরও একটি বড়ো দুর্যোগের সম্মুখীন হতে যাচ্ছি।তাই ক্যাম্পাস খোলার ব্যাপারে এখনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। যাতে পরে এর জন্য আমাদের বড় খেসারত না দিতে হয়।
রাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারন সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ বলেন,বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২মাস থেকে সারাদেশে লকডাউন চলছে। এমতাবস্থায় সরকার ৩১শে মে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত সবকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ইতোমধ্যেই কিছু বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা করছে।কিন্তু দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় খুললে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের সম্মিলন ঘটবে।ক্লাস, হল, মেস গুলোতে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে।তাই এখনি ক্যাম্পাস না খুলে পরিস্থিতি আরও পর্যবেক্ষণ করা উচিত হবে।
এদিকে রাবির সেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়ার্ড লিংকআপ এর সভাপতি জামান বলেন,দেশেই বর্তমান করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।আগামী দিনগুলোতে তা আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারে।। এমতবস্থায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর মিলনস্থল। সেই প্রতিষ্ঠান চালু করা মোটেই যুক্তিসঙ্গত নয়। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও ক্লাসরুমে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন সমূহের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ক্যাম্পাসে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে পারে।
উদীচী রাবি সংসদের সাধারন সম্পাদক হাফিজুর রহমান রবিন বলেন,চলমান পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। প্রতিদিন মানুষ করোনা ভয়াবহতার নতুন অভিজ্ঞাতা নিচ্ছে।আর বিশ্বে যখন এর ভয়াবহতা দেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করছে। তখন আমাদের মত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার প্রশ্নই উঠে না।যেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকিতে থাকবে।তাই আমি মনে করি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাস খোলা মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না।
এদিকে রাবি নবজাগরণ ফাউনডেশনের সভাপতি খালিদ হাসান বলেন,চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা মোটেও যুক্তিযুক্ত হবে না। দেশে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়েই চলেছে। বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যাও।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম গুলোতে যথেষ্ট স্পাস না থাকায় সামাজিক দুরত্ব মেনে ক্লাস করা প্রায় অসম্ভব।অন্যদিকে মেস ও হল গুলোতে শিক্ষার্থীরা যেভাবে অবস্থান করে। তাতে সেগুলো যেকোন সময় হয়ে যেতে পারে করোনা আক্রান্তের হটস্পট।তাছাড়া আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের সাস্থ সুরক্ষার পরিপুর্ণ ব্যবস্থা করতে পারে। তাহলে আরো কিছুদিন পর ক্যাম্পাস খোলা যেতে পারে।