রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি॥
পরীদের পাখা থেকে প্রতিদিন খুলে নিই সোনার পালক
কতবার বুনি আমি বেদনার বারান্দায় নকশি চাটাই
আলোকের যান নিয়ে রঙধনু পথ ধরে নিপুণ চালক
ছিন্ন করে চলে যায় আমার রঙের ঘুড়ি সুতোর লাটাই।
কয়েকটি নীল ঘুড়ি কবে যেন আনমনে উড়িয়েছিলাম
হয়তো বা ওরা ছিলো অবাক ঠিকানা লেখা মনোময় খাম
ওদের ছিলো না কোনো সুতোর বাঁধন কোনো লাটাই-শাসন
মেঘের দালানবাড়ি ছুঁয়ে ছুঁয়ে ঘুড়ি উড়ে গেছে অকারণ।
সাঁতরে পেরোয় আকাশগঙ্গা রঙমাতেলা ঘুড়ি
এক ফোঁটা কোন মেঘ-আগুনে পুড়লো ঘুড়ির পাখা
অগ্নিজলের নীল দহনে ঘুড়ির ওড়াউড়ি
ভস্ম মেখে উড়লো কাহার অবাক অঙ্গরাখা।
উড়িতেছিল ঘুরিতেছিল ইচ্ছে পাগল ঘুড়ি
মেঘময়ূরের পরম্পরায় ঝরিতেছিল নীল
রঙতামাশায় মাতাল বাতাস করলো কি খুনসুড়ি!
এক ফোঁটা রঙ লাগলো গালে– ঘুড়ির অন্ত্যমিল!
কবিতার সেই ঘুড়ি এখন চারদিকে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করেছে। দেশজুড়ে যখন
প্রাণঘাতি করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে,ঠিক তখন ঘুড়ি উৎসবে মেতে উঠেছেন নানা
বয়সী মানুষ। শিশু-কিশোর,তরুণ-যুবক এমনকি মাঝ বয়সীরাও বাদ যাচ্ছেনা এই
ঘুড়ি উড়ানো থেকে।
দিন-রাত আকাশে শোভা পাচ্ছে নানা রঙবেরঙের ঘুড়ি।সারা
দেশের মতো বরিশালের বানারীপাড়ায়ও প্রাণঘাতি করোনার ভয় উপেক্ষা করে
দিন-রাত ছোট-বড় নানা বয়সী ঘুড়ি প্রেমী মেতেছেন ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবে।
সকাল-বিকাল-ভরদুপুর আর রাতের বেলায় বাড়ির ছাদে, খোলা মাঠে, নদীর
তীরে,খালি জায়গায় তাদের ঘুড়ি উড়াতে দেখা যায়। করোনাকালে শিশু,কিশোরদের
বাড়িতে আটকে রাখতে অনেক অভিভাবক তাদের ঘুড়ি বানিয়ে বা বাজার থেকে সুতা ও
লাটাই সহ কিনে এনে দিচ্ছেন।
এখানে অনেকেই ঘুড়ি বানানো, মাজা সুতা ও
লাটাইয়ে ব্যবসাও করছেন। বানারীপাড়ার আকাশে দিন-রাত উড়তে দেখা যায় নানা রং
বেরঙের ঘুড়ি। বিশেষ করে রাতের আকাশে আলো ঝলমলে ঘুড়ি দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন
সবাই।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুড়ি উৎসবের প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা
হচ্ছে। যেখানে বিজয়ীদের মাঝে রঙিন টিভি সহ বিভিন্ন আকর্ষনীয় পুরস্কার
দেওয়া হচ্ছে। এদিকে এ ঘুড়ি উৎসব এলাকাবাসীর কাছে দারুন উপভোগ্য হয়ে
উঠেছে।