তাপস কর,ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরে টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নেতাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই নদীর বেড়িবাঁধ না থাকায় উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের বন্দ উষান, ভাদুয়া, জাকিরপাড়া, শ্রীপুরসহ “ষোল”টির বেশি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আজ (৩০জুন) দুপুরে ওই পানিবন্দি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্দ উষান গ্রামের জয়নাল আবেদীনের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বসতঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
নৌকা ও কলার ভেলা তৈরি করে মানুষ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বয়স্ক ও শিশুদের নিয়ে চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন পানিবন্দি পরিবারগুলো। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দ উষান বাজার, স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা, মসজিদসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। চরম ঝুঁকি ও বিলীনের শঙ্কায় রয়েছেন অসংখ্য ঘরবাড়ি।
যেকোনো সময় নদীগর্ভে তাদের ঘরবাড়ি বিলীন হতে পারে বলে আতঙ্কে রয়েছেন বন্দ উষান বাজারের আশপাশের প্রায় ত্রিশটির বেশি পরিবার। চলমান ভাঙন প্রতিরোধ না করা গেলে গ্রামের হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, বাজার, মসজিদসহ সবকিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এমনই শঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান জানান, নদী ভাঙনের ফলে ঘর-বাড়ি বেঁধে রাতে ঘুমানোর জায়গাটুকু পর্যন্ত বিলীন হয়ে গেছে। আমার মৃত্যুর পর নিজের লাশটি অন্যের জমিতে কবর দিতে হবে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সম্প্রতি অন্যের জায়গায় ঘর করে জীবিকা চালাচ্ছেন তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ দীর্ঘদিন যাবৎ সেখানে কোনো নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ কল্পে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা জেলার উপ-প্রকৌশলী মো. রহিদুল হোসেন খান এ প্রতিবেদককে জানান, বন্যার পানি এখন কমতে শুরু করেছে।
তবে আকস্মিক বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়া বেশকটি জায়গায় বেড়ি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ওইসব জায়গায় বাঁধ দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ইউএনও ফারজানা খানম বলেন, ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভাঙন রোধে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। অচিরেই কাজ শুরু করা হবে।