বিশুদ্ধ পানি, পোকামাকড় সেই সাথে ডাকাতের ভয় বানভাসিদের মধ্যে সর্বদা বিরাজমান। থাকার আশ্রয়টুকু পানির নিচে ডুবে যাওয়াতে আশ্রয় নিতে হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। ছোট ছোট শিশু বাচ্চা সহ গবাদি পশুগুলোকে সাথে নিয়ে বড় দুষ্কর হলেও যেন কিছুই করার নেই!! খাওয়া-দাওয়া আর যাই হোক বন্যার পানি গুলো খাওয়া একেবারে অনুপযুক্ত বলে দাবি করেন মানুষেরা।
কারণ পানিতে ভাসতে কত কিনা চোখে পড়ে তাদের কখনো মরা গরু, কখনো হাঁস মুরগি ছাগল আবার কখনো বা মারা কুকুর। যা শুধু বানভাসি মানুষ দেরি নয় সাধারণ মানুষের ঘৃণার বিষয়। উপায় না পেয়ে সেটাও খেতে হচ্ছে অনেকেই বলে অভিযোগ তাদের। অভিযোগে আরো জানা যায় তিনদিন লাগে পানিবন্দি আছি।
ছেলে-মেয়ে, গরু ছাগল নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিছি। ঘরে কয়টা চাল ডাল আছে তা না রান্না করে খাবার পামো কিন্তু পানির ব্যাবস্থা তো করবের পাচ্ছি নে এ বানের পানি তুলে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে খাবার নাগছি ঐদিকে পয়ঃনিষ্কাশনেরও বেজায় সমস্যা হছে,এভাবেই বলতেছিলেন ফুলছড়ি ভাষাপাড়া বাঁধে আশ্রিত পারভিন বেগম।
ওদিকে একই বাঁধে আশ্রিত জমিলা বেগম বলেন -চাল ডাল আছে নিজেদের খাওয়ার চিন্তা করিচ্ছি নে তবে গরু-ছাগল খাওয়া-দাওয়া নিয়া বেজায় বিপদে পড়িছি।সামনে ঈদ আসিচ্ছে এডা গরু বেচার উপযুক্ত, এখন ভালো-মন্দ খাওয়ানো দরকার, বানের পানিতে সব ডুবে গেছে গরুর খাদ্য সংকটে পড়ছি।
ঐদিকে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া, কাবিলপুর, মাঝিপাড়া, ছাতারকান্দি, বাজে তেলকুপি, বুলবুলির চর, কাউয়াবাধা, উজালডাঙা, কৃষ্ণমনি, পূর্ব খাটিয়ামারী গ্রামের লোকজনের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় তারা বিশুদ্ধ পানির সংকট,গোখাদ্যের সংকট, সাপ পোকামাকড় ও ডাকাত আতঙ্কে দিন কাটছে এসকল এলাকার বানভাসী মানুষ।
এভাবেই গাইবান্ধার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধার বন্যা কবলিত সাঘাটা,ফুলছড়ি,সদর ও সুন্দরগঞ্জের চার উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের ২৬০ চর ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক বানভাসী মানুষ পয়ঃনিস্কাশের সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছে।
মঙ্গলবার(১৪জুলাই) সকাল ৬টার পূর্ববর্তী ১২ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘটের পানি গত সদরের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ১২ ঘন্টায় ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা এলাকায় টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় বেশি কষ্টে আছেন তারা। কিন্তু বিশুদ্ধ পানির অন্য কোনো উৎস না থাকায় ডুবে যাওয়া টিউবওয়েলের পানি দিয়ে চলছে নিত্যদিনের কাজকর্ম।অন্যদিকে বাঁধে আশ্রিতদের বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের আরও সংকট দেখা দিয়েছে।
ডাকাত আতঙ্কের বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন চরাঞ্চলগুলোতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে চরবাসী নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ। ঐদিকে বিশুদ্ধ পানি সংকট ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থায় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন জেলা প্রশাসক এমনটা জানা গেছে।