স্বামী-শাশুড়ির নির্যাতনে বাবার বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিল সুমি। কিন্তু রাস্তা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। এরপর ঘরের ভেতর আটকে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী-শাশুড়ি। সুমির চিৎকারে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় তাকে। বাবার বাড়িতে ফিরেছে সুমির লাশ।
এ নৃশংস ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের তারাকান্দায়। নিহত খোদেজা
আক্তার সুমি ফুলপুর উপজেলার সাহাপুর (তাতারকান্দা) গ্রামের মৃত
কাশেম আলী ওঝার মেয়ে। এ ঘটনায় মামলার পর পুলিশ অভিযান
চালিয়ে সুমির স্বামী উপজেলার তিয়ারকান্দি গ্রামের হাসু মিয়ার
ছেলে ইটভাটা শ্রমিক বিল্লাল হোসেন ও তার মা কুলসুম বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে।
প্রায় দুই বছর আগে বিল্লালের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমির। স্বামীর সংসারে
আসার পর থেকেই যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো স্বামী-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন। পিতৃহারা
সুমি ভাইদের কাছ থেকে টাকা এনে দিতে পারবে না বলে জানালে
প্রায়ই মারধর করা হতো তাকে। তিন সপ্তাহ আগেও মারধরের কারণে বাবার বাড়িতে চলে যায় সুমি। তখন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধির
মাধ্যমে মধ্যস্থতা করে সুমিকে সংসারে ফিরিয়ে আনে বিল্লাল। গত ৯ জুলাই
রাতে স্বামী-শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হয় সুমির। পরদিন শুক্রবার সকালে সুমি
নির্যাতনের আশংকায় বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তাকে ঘরের মধ্যে আটকে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সুমির চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠায়। তবে সুমির শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে বুধবার রাতে মৃত্যু হয় সুমির। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার রাতে বাবার বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয় সুমিকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তারাকান্দা থানার এসআই খন্দকার আল-মামুন বলেন, নিহতের স্বামী-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।