পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমানা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সন্ধ্যা থেকে ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর সদর উপজেলার তিন ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এর ফলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন শনিবার দুপুরে দেখা যায়, চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের কুলুরচর বেপারীপাড়া, খাসপাড়া টাকীমারী, বাঘলদি, ডাকপাড়া, চুনিয়ারচর সহ ১২ গ্রাম, চরমোচারিয়া ইউনিয়নের হরিনধরা, চরভাবনা, মুন্সীর চর, নলবাইদ, ধাতিয়াপাড়াসহ ওই ইউনিয়নের ৯০ ভাগ, কামারেরচর ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নম্বর চর, চর সাহাব্দী, বাঘেরচরসহ ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
আকস্মিক বন্যায় আউশ আবাদ, সবজি ক্ষেত ও পাট আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে।
শেরপুর জামালপুর সড়কের চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের পোড়ার দোকান ও শিমূলতলী কজওয়ে দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
বর্তমানে বিকল্প সড়কে সীমিত আকারে যানবাহন চলছে। কুলুরচর বেপারীপাড়া গ্রামে পানি উঠায় ওই গ্রামের শতাধিক পরিবার পার্শ্ববর্তী জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক নৌকায় বেপারীপাড়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দেখতে যান। এসময় তিনি তিন শতাধিক মানুষের হাতে খাবার তুলে দেন।
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোন চিন্তা করবেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছেন। সরকার করোনার পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সব রকমের সহযোগিতা করবে।
এসময় তার সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চরমোচারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. খোরশেদুজ্জামান বলেন, আমার ইউনিয়নের ৯৮ ভাগ মানুষ পানিবন্দি। তিনি বলেন, হঠাৎ পানি বেড়ে ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়িঘরে পানি উঠেছে। কৃষকের আউশ, পাট ও সব্জী আবাদ ধ্বংস হয়ে গেছে।
কামারের চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবারকে আজ খাদ্য দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, করোনার কারণে মানুষ কর্মহীন। এরমধ্যে বন্যা হওয়ায় ইউনিয়নের মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন।
শেরপুর-জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ বলেন, পানি এই মূহূর্তে বিপদসীমা স্পষ্ট করেছে। তবে সুখবর হচ্ছে, শনিবার দিনের বেলায় পানি বাড়ার রেট কমেছে।
তিনি বলেন, গত পরশু ২৪ ঘন্টায় ৩৮ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘন্টায় অর্থাৎ শনিবার সকালে ২০ সেন্টমিটার পানি বেড়েছে। আবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাত্র ৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। সম্ভবত পানি আর বাড়বে না
সদর উপজেলার ইউএনও ফিরোজ আল মামুন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। আপাতত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫০ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।