November 27, 2024, 10:43 pm
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

সংগ্রাম ও ত্যাগের ইতিহাস রাবির ‘সাবাস বাংলাদেশ’ ভাস্কর্য

রায়হান ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি
  • আপডেটের সময় : সোমবার, আগস্ট ১০, ২০২০
  • 874 দেখুন

“সাবাস, বাংলাদেশ,এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়ঃ জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়” গণমানুষের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতাংশটি যেন এক সংগ্রামী, বিপ্লবী ও অদম্য বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় ইতিহাসের নাম। যে ইতিহাস অর্জিত হয়েছে লক্ষ বাঙ্গালীর তাজা প্রাণের বিনিময়ে।

অর্জিত হয়েছে বাঙ্গালী মায়ের সম্ভ্রমের বিনিময়ে। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁঁদের এই ত্যাগ ও স্মৃতিকে জাতির কাছে চির ভাস্বর করে রাখতে দেশে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন ভাস্কর্য। এসব ভাস্কর্য বাঙ্গালীর সংগ্রামের কথা বলে, বলে মুক্তির কথা। জাতির কাছে তুলে ধরে বাঙ্গালীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা।

তরুণ প্রজন্মকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামী চেতনায় করে উদ্ভাসিত। দেশর বিভিন্ন প্রান্তে নির্মিত এমন ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ভাস্কর্যের নাম ‘সাবাস বাংলাদেশ’ ভাস্কর্য। যেটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়(রাবি) চত্বরে অবস্থিত। চিত্রশিল্পী নিতুন কুন্ডের অনন্য শৈল্পিক হাতের যাদুকরী ছোয়ায় দেশের অন্যতম নান্দনিক এই ভাস্কর্যটি গড়ে উঠেছে।

ভাস্কার্যটির অপরূপ প্রকাশভঙ্গিমা, কার্যের সরলতা, চিত্রেঁর গতিময়তা এবং সংগ্রামী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে দেশ বিদেশে অর্জিত হয়েছে অনন্য খ্যাতি। স্বাধীনতার যুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।

মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংগামে অংশ নিয়ে চির স্মরণীয় হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম। সর্বদা পাক হানাদার বাহিনীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। তৎকালীন হানাদারদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শহীদ হন ড. শামসুজ্জ্বোহা, অধ্যাপক হবিবুর রহমান, সুখরঞ্জন সমাদ্দার ও মীর আব্দুল কাইউমসহ অনেকে।

অন্যায়ের কাছে আপোষহীন জীবন্ত শহীদখ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মজিবর রহমান দেবদাস ছিলেন অন্যতম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যুদ্ধত্তোর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকে চির ভাস্বর করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী নিতুন কুণ্ড ‘সাবাস বাংলাদেশ’ ভাস্কর্যটি নির্মাণ কার্য শুরু করেন।

উদ্বোধন করেন শহীদ জননীখ্যাত জাহানারা ইমাম। ভাস্কর্যে রাইফেল হাতে দুই জন মুক্তিযোদ্ধাকে দেখা যায়। একজনের পড়নে প্যান্ট, অন্যজন লুঙ্গি।যেটা মুক্তিযুদ্ধে সকল শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণের চিত্রটি ফুটে তোলেছে। ভাস্কর্যে আরো দেখা যায়, একজনের মধ্যে প্রচণ্ড গতিময়তা এবং অন্যজন স্থির।

যেটা যুদ্ধের মাঠে অস্ত্রের লড়াইয়ের পাশাপাশি স্থির বুদ্ধির লড়াইয়ের চিত্রটি ফুটে তুলেছে। যুদ্ধ জয়ের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও গতিময়তা এবং স্থির যুদ্ধ কৌশলের চিত্র এই দুজন যোদ্ধার মাধ্যমে সুক্ষ্ম ভাবে ফুটে তোলা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পদতলে দুপাশে বাঙালির জীবনযাত্রার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে।

বামপাশে দেখা যায় কয়েকজন বাউল মিলে গান করছেন। যেটা বাঙ্গালী জাতির অসাম্প্রদায়িক এবং হাজার বছরের গ্রামীণ লোক সংস্কৃতির চিত্রকে ফুটে তুলেছে। ডানপাশে দেখা যায়, মায়ের কোলে সন্তান এবং পতাকা হাতে কিছু নারী দাঁড়িয়ে আছেন। যেটা যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়কে নির্দেশ করে। এটি নির্দেশ করে বাঙ্গালি মায়ের ভাষা ও ইজ্জতের বিজয়কে।

মুক্তিযুদ্ধাদের পিছনে প্রাচীরের মাঝে বৃত্ত বাংলাদেশের পতাকাকে নির্দেশ করে। যেখানে বীর বাঙ্গালী মাতৃভূমি রক্ষায় সম্মুখপানে থেকে দৃঢ়চিত্তে হানাদার মোকাবিলার চিত্রকে ফুটে তুলেছে। নিতুন কুণ্ডের নিপুণ হাতের জাদুকরী ছোঁয়ায় কালজয়ী এই লাল বেলে মাটির ভাস্কর্যে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী ইতিহাস এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলার চুড়ান্ত এক বিজয়ের জীবন্ত চিত্র।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102