বরিশালের উজিরপুরের হারতা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য শান্তনা মল্লিকের বিরুদ্ধে বয়স্ক,বিধবা,মাতৃত্বভাতা ও আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বরাদ্ধের নামে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। তদন্তকালে শত শত বিক্ষুব্ধ নারী ও পুরুষ দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
১৭ আগষ্ট সোমবার বেলা ১১ টায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘটনাস্থলে তদন্ত কার্যক্রমে উপস্থিত হন। বেলা ১২টায় ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল মল্লিকের নেতৃত্বে প্রথমে কালবিলা নামক স্থানে পরে দুপুর ২ টায় হারতা বাজার প্রধান সড়কে দীর্ঘক্ষন ভূক্তভোগী পরিবাররা বিক্ষোভ মিছিল করে।
উল্লেখ্য ১৬ আগষ্ট কালবিলা গ্রামের হতদরিদ্র প্রিয়লাল মল্লিক, রতন মল্লিক,সমিরন রায়,ক্ষিতিশ বল্লভ,সীমা মল্লিক,বিজলি মল্লিক,শঙ্কর মল্লিক,দিলিপ কুমার বিশ্বাস,অঞ্জু বৈরাগী,সীমা মল্লিক,হরেন্দ্রনাথ মল্লিক, কালিপদ মল্লিক, লক্ষী ফলিয়া অভিযুক্ত মহিলা ইউপি সদস্য শান্তনা মল্লিকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যপারে নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ১৭ আগষ্ট সোমবার বেলা ১১ টায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহ ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইশরাত জাহান তদন্তে যান। তদন্ত চলাকালীন সময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়।
এরপর বিক্ষুব্ধ ভূক্তভোগীরা ইউপি সদস্য শান্তনা মল্লিকের পদত্যাগের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায় ইউপি সদস্য শান্তনা মল্লিক কালিপদ মল্লিকের কাছ থেকে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের নামে ১০ হাজার ঘুষ নেয় এবং আরো ১০ হাজার টাকা দাবী করে।
লক্ষী ফলিয়ার কাছ থেকে বিধবা ভাতার নামে ৬ হাজার টাকা, প্রিয়লাল মল্লিকের কাছ থেকে ঘর বরাদ্দের নামে ৬ হাজার টাকা আদায় করে এবং বাকী ৬ হাজার টাকা দাবী করে। রতন মল্লিকের কাছ থেকে ঘর বরাদ্দের নামে নগদ ১৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়,আরো ৩ হাজার টাকা দাবী করে।
সমীরন মল্লিকের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা বাবদ ৭ হাজার টাকা আত্মসাত করে,আরো ৩ হাজার টাকা দাবী করে। ক্ষিতিশ বল্লভের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা বাবদ ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। সীমা মল্লিকের কাছ থেকে মাতৃত্ব ভাতার নামে ৩ হাজার টাকা নেয়, আরো ৩ হাজার টাকা দাবী করে।
বিজলী মল্লিকের কাছ থেকে মাতৃত্ব ভাতার নামে ৩ হাজার টাকা নেয়,বাকী ৫ হাজার টাকা দাবী করে। শঙ্কর মল্লিকের কাছ থেকে ঘর বরাদ্দের নামে নগদ ১২ হাজার টাকা আদায় করে,আরো ৮ হাজার টাকা দাবী করে। দিলিপ কুমার বিশ্বাসের কাছ থেকে ঘর বরাদ্দের নামে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়,বাকী আরো ১০ হাজার টাকা দাবী করে।
অঞ্জু বৈরাগীর কাছ থেকে বিধবা ভাতার নামে ৬ হাজার টাকা নেয়,আরো ৩ হাজার টাকা দাবী করে। সীমা মল্লিকের কাছ থেকে মাতৃত্ব ভাতা বরাদ্দের নামে নগদ ৩ হাজার আদায় করে, আরো ৩ হাজার টাকা দাবী করে। হরেন্দ্রনাথ মল্লিকের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা বাবদ নগদ ৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে বাকী আরো ৩ হাজার টাকা দাবী করে।
এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন মহিলা ইউপি সদস্য শান্তনা মল্লিক দুর্নীতির চরমে পৌঁছেছে। তিনি ঘুষ বানিজ্য ছাড়া কিছুই বুঝেননা। ঘুষ ছাড়া মিলছেনা কোন কার্ড। হতদরিদ্ররা সরকারি সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তার কারনে। এমনকি সরকারি কম্বল বিতরনেও ১ শত টাকা ঘুষ বানিজ্য করেছে।
তাকে অপসারন করার দাবী জানিয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। সঠিক বিচার না পেলে এলাকাবাসী পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলন কর্মসুচি করবে বলে ঘোষনা দেয়। অভিযুক্ত শান্তনা রানী জানান, তার সাথে জমি নিয়ে বিরোধের কারণেই কতিপয় লোক অপপ্রচার চালাচ্ছে।