বরিশালের উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১২ কোটি টাকার প্রকল্প ভাসছে নদীতে। বরাদ্দ না পাওয়াকে দুষছেন কর্মকর্তারা। অর্ধশত কোটি টাকার সরকারি- বেসরকারি স্থাপনাসহ যেকোন মূহুর্তে বিলিন হতে পারে উজিরপুর-সাতলা সড়ক।
ইতিমধ্যে সন্ধ্যা নদীর করাল গ্রাসে কয়েকশত পরিবার বাড়ী ঘর হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সূত্রে জানা যায়- সন্ধ্যা নদীর ভাঙন রোধ কল্পে ১ বছর মেয়াদে ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ২শত মিটার প্রস্থ ১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সে অনুযায়ী ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নদীর ¯্রােতধারা পরিবর্তনের জন্য সন্ধ্যা নদীর লস্করপুর নামক স্থানে খুলনা ড্রেজার ডিভিশনের মাধ্যমে ড্রেজিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ শাহে আলম। কিন্তু প্রায় ১ বছর অতিবাহিত হলেও ওই কাজের ৩ ভাগের ১ভাগও কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি ওই প্রকল্প।
তবে সময়মত বরাদ্দ না পাওয়ায় কার্যক্রম সঠিক সময়ে সম্পাদন করতে পারছেন না বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বে) আঃ ছালাম ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ গোলাম নবী। তারা আরো জানান, এ যাবৎ মাত্র ২ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে সে অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে।
খনন কার্যে নিয়োজিত ড্রেজার ডিভিশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আতিকুর রহমান জানান এ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ৫০ মিটার প্রস্থ খনন কার্য শেষের পথে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কার্যক্রম কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। বড়াকোঠা ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড: শহিদুল ইসলাম জানান ড্রেজিং কার্যক্রমের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন।
এভাবে চলতে থাকলে ৩ বছরেও এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে না। অব্যাহত ভাঙনে চথলবাড়ী মডেল বাজার, ৩তলা বিশিষ্ট আঃ মজিদ বহুমুখি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,চথলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,২তলা বিশিষ্ট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পোষ্ট অফিস, নারিকেলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি মসজিদ, নবনির্মিত উজিরপুর-সাতলা সড়ক সহ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার স্থাপনা যে কোন মূহুর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
সঠিক সময়ে উদ্যোগ না নিলে উজিরপুরের সাথে পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে নারিকেলী, চাউলাহার, সাকরাল, লস্করপুর, চথলবাড়ী, মালিকান্দাসহ কয়েকশত পরিবারের ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা আরো জানান, ড্রেজার কার্যক্রমের যেটুকু সরকারের বরাদ্দ হয়েছে তাও সঠিকভাবে করছেনা কর্তৃপক্ষ।
নদীর বালু কেটে কোথায় রাখেন স্থানীয়রা জানেন না আবার অভিযোগ রয়েছে কিছু কিছু বালু রাতের আধারে অবৈধভাবে বিক্রি করছেন ড্রেজার কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,সন্ধ্যা নদীর লস্করপুর এলাকায় বড় আকারে একটি ড্রেজার, পাশেই একটি আবাসিক লঞ্চ পানিতে ভাসছে।
সারি, সারি ড্রেজিং কার্যক্রমের যন্ত্রপাতি, পাইপ পড়ে আছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই সময় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। স্থানীয়রা আরো জানান,ওই প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নদীর মধ্যে অলস সময় পার করছেন। ভাঙ্গল কবলিত মানুষেরা জীবন জীবিকার তাগিদে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দিপক রঞ্জন দাস জানান, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।