নোয়াখালী ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি করা আবাসন প্রকল্প পরিদর্শনে গেছেন ৪০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।শনিবার ভোরে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ৪০ জন রোহিঙ্গা নেতাকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মাহবুবুল আলম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।নির্বাচিত প্রতিনিধি দলের সদস্যদের শুক্রবার উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে। শনিবার ভোরে তারা সেখান থেকে রওয়ানা হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রথমে তারা বাস যোগে চট্টগ্রাম যাবেন। সেখান থেকে নৌবাহিনীর সহায়তায় জলযানে ভাসানচরে পৌঁছাবেন। প্রতিনিধি দল সাত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন।
পরিদর্শন শেষে আট সেপ্টেম্বর তারা ক্যাম্পে ফিরে আসবেন। ক্যাম্পে ফিরে তারা রোহিঙ্গাদের কাছে সেখানকার অবস্থা বর্ণনা করবেন।
প্রতিনিধি দলে থাকছেন বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি, মাঝি এবং মসজিদের ইমাম।আরআরআরসি মাহবুব আলম তালুকদার জানিয়েছেন, ভাসানচরে যাওয়ার সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সরেজমিনে ভাসানচর আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। সেখানকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানবেন। প্রতিনিধি দলের কাছে ভাসানচর পরিস্থিতি অবহিত হয়ে শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তাদেরকে খোলামেলা পরিবেশে রাখার জন্য বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠা ভাসানচরে সরকার প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছে। এতে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে। আবাসন প্রকল্প ঘিরে প্রায় ১৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ১২০টি সাইক্লোন সেন্টার, প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও চিকিৎসা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে ৩০৩ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে বসবাস করছে। যারা বিভিন্ন সময় সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া পাচারের সময় বঙ্গোপসাগর হতে উদ্ধার হয়েছিল। বাংলাদেশ নৌবাহিনী এসব রোহিঙ্গাদের তত্বাবধান করে আসছিল।
উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান জানান তারা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য বিষয়ে সরজমিনে পরিদর্শন করে আবার ও ক্যাম্পে ফিরে আসবেন। তাদেরকে শুক্রবার করোনা টেষ্ট করে ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়। ওখান থেকে সরাসরি বাস যোগে তারা ভাসানচরে উদ্দেশ্য রওনা দেন। রেজিষ্ট্যাট ক্যাম্পের সভাপতি হাফেজ জালাল আহমদ জানান রোহিঙ্গারা ভাসানচরে চলে গেলে কিছুটা সন্ত্রাসী কার্যক্রম কমে যাবে। তাকে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে দুপুরে মাস্টার মুন্নার গ্রুপের ক্যাডারেরা গুলি করার চেষ্টা করেছে। তিনি আরো জানান বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গারা বসবাস করার জন্য একেবারে নিরাপদ নয়।