পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি ইউনিয়ন পরিষদে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লিটনের পরিবারের পক্ষ থেকে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান বলছেন ‘তিনি থাপ্পড় দেননি, তার পরিষদের একজন মেম্বার দিয়েছেন।’
সাঁথিয়া থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানা গেছে, এক বছর আগে সাঁথিয়া উপজেলার পাঁচ ধোপাদহ গ্রামের লিটন হোসেনের মেয়ে আয়শা খাতুনের (১৯) সঙ্গে ধুলাউড়ি ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের রুবেল হোসেনের বিয়ে হয়। রুবেল চরপাড়া গ্রামের সাকেত মোল্লার ছেলে। মেয়ের বিয়ের সময় লিটন হোসেন জামাইকে নগদ ৬০ হাজার টাকা যৌতুক দেন। বিয়েতে মোহরানা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ টাকা।
অভিযোগে জানানো হয়, বিয়ের পর থেকেই মেয়ে আয়শার ওপর জামাই রুবেলসহ তার পরিবারের লোকজন নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। আরও যৌতুকসহ নানা আবদার রয়েছে ওই পরিবারের। মেয়ের ওপর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়েও তিনি মামলায় না গিয়ে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার আশায় ধুলাউড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জরিফ আহমেদের শরণাপন্ন হন।
শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লিটন হোসেন ও তার মেয়েকে চেয়ারম্যান ডেকে পাঠান। লিটন হোসেন তার মেয়ে আয়শাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন। চেয়ারম্যান এ সময় লিটন হোসেনকে ৩২ হাজার টাকা নিয়ে তার মেয়ে আয়শাকে তালাকনামায় স্বাক্ষর দিতে নির্দেশ দেন। এ কথায় লিটন মোল্লা রাজি হননি। এতে ক্ষুদ্ধ হন চেয়ারম্যান। তিনি লিটন হোসেনের কানের ওপর কষে থাপ্পড় মারেন। বাবাকে থাপ্পড় দেয়ার প্রতিবাদ করেন মেয়ে আয়েশা।
এ সময় তিনিও মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে লিটন হোসেন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে রোববার তাকে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় লিটন হোসেনের স্ত্রী ময়ুরী খাতুন বাদী হয়ে রোববার বিকেলে ধুলাউড়ি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একইসঙ্গে জামাই রুবেল ও তার ভাই ওবায়দুলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেন।এ ব্যাপারে ধুলাউড়ি ইউনিয়ন পষিদের চেয়ারম্যান জরিফ আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তিনি থাপ্পড় মারেননি। অন্য একটা বিষয় নিয়ে তার ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার লিটন হোসেনকে থাপ্পড় মেরেছেন।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, চেয়ারম্যান থাপ্পড় দিয়েছেন বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে জানিয়েছেন তিনি থাপ্পড় দেননি। থাপ্পড় দিয়েছেন তার পরিষদের এক মেম্বার। ওসি জানান, আসলে কে মারপিট করেছে এ ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখার জন্য সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) থানা থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ যাবে। এরপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।