সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলেছে বিপন্ন প্রাণী বনকুকুর বা রামকুত্তা সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দল সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এ বনকুকুরের দেখা পেয়েছে আইইউসি এনের তালিকায় এটি বিপন্ন প্রাণী এবং পৃথিবীতে মাত্র দুই হাজার বনকুকুর এখন টিকে আছে।
বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রামের কিছু বনে এ বনকুকুর টিকে আছে বলে গবেষক দল ধারণা করছে তবে তা অত্যন্ত দুর্লভ বাংলাদেশ থেকে নেকড়ে বিপন্ন হওয়ার কারণ ছিল নির্বিচারে হত্যা, একইভাবে বনকুকুর মারতেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এ দেশে পুরস্কার পর্যন্ত ঘোষণা করার কথাও জানা যায় যা প্রাণীটিকে বিলুপ্তির পথে নিয়ে গেছে বাংলাদেশে কতগুলো বন কুকুর আছে তা নিয়ে কোনো গবেষণা বা জরিপ এখনও হয়নি তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এ বনকুকুরের দেখা পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ক্রিয়েটিভ ফর কনজারভেশনের অ্যালায়েন্সের ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে বান্দরবানে দেখা মিলেছে এ কুকুরের আইইউসিএনের বাংলাদেশের কর্মকর্তা সীমান্ত দিপু জানান বন কুকুরকে বাংলাদেশে বিপন্ন হিসেবে ঘোষণা করেছে আইইউসিএন আইইউসি এনের হিসাবে পৃথিবীতে এ প্রাণী মাত্র ২ হাজারের মতো টিকে আছে হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বনকুকুরের দেখা পাওয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলটির পরিচালক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মুনতাসির আকাশ জানান অঞ্চলভিত্তিক বনকুকুরকে জংলি কুকুর বন কুকুর রামকুকুর লালকুকুর বা ঢোল নামেই ঢাকা হয় এর ইংরেজি নাম এশিয়াটিক ওয়াইল্ড ডগ, নেকড়ে ও কুকুরের সঙ্গে অনেক মিল থাকলেও চেহারা অনেকটা শেয়ালের সঙ্গে মেলে পা খাটো কিন্তু নাকের উপরের অংশ উঁচু লেজ ঝোপালো লেজের আগা কালো মাথা এবং দেহের উপরের অংশ লালচে বাদামি রং কানের ভেতর মুখের নিচ গলা ও দেহের নিচের অংশ সাদা এক সময় বাংলাদেশে এদের সচরাচর দেখা গেলেও বর্তমানে একেবারেই বিরল ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে এ কুকুর
আকারে জার্মান শেফার্ডের মতো কিন্তু হিংস্র ও ক্ষিপ্রতায় অন্য যে কোনো প্রাণী থেকে ভয়ঙ্কর। দলের সামনে বাঘ বা চিতা পড়লেও সমীহ করে চলতে হয় ২ থেকে ২০টির মতো কুকুর দল বেঁধে ঘোরে এবং শিকার ধরে পছন্দের খাবার হরিণ শূকর বনছাগল জাতীয় প্রাণী। তবে প্রয়োজনে গরু-মহিষকেও আক্রমণ করে নিজেদের ওজনের ১০ কেজি হলেও বেশি ওজনদার প্রাণীকেও অনায়াসে মেরে ফেলতে পারে বনকুকুর দলের সামনে যে কোনো বড় প্রাণীও অসহায় বড় শিকার ধরার বেলায় প্রাণীকে সামনে-পেছনে উভয় দিক থেকেই আক্রমণ করে বা তাড়িয়ে নিয়ে যায় তাড়াতে তাড়াতে ক্লান্ত করে মারে এরা যে প্রাণীকে টার্গেট করে তাকে প্রথমে চোখে আক্রমণ করে না মরা পর্যন্ত ছাড়ে না।
তাড়িয়ে তাড়িয়ে ক্লান্ত করে মেরে ফেলে তাড়ানো অবস্থায়ই জীবিত প্রাণীটিকে খাবলে খেতে থাকে এভাবে ১০ থেকে ১৫টি কুকুর মিলে খুব কম সময়ের মধ্যেই যে কোনো বড় প্রাণীকে শেষ করে ফেলতে পারে কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে না বরং শিস দেয়ার মতো শব্দ করে ডাকে ইংরেজিতে এদের তাই হুইসলিং ডগও বলা হয়। এরা সচরাচর ভালুক চিতাবাঘ বা বাঘকে এড়িয়ে চলে তবে আক্রান্ত হলে তাদেরও ছাড়ে না প্রাকৃতিক বন নষ্ট এবং গণহারে হত্যার কারণে এ প্রাণী প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, মনতলা সরকারি শাহজালাল কলেজের প্রভাষক আক্তার হোসাইন জানান এখনও এ প্রাণীকে রক্ষা করা সম্ভব।