বড়াইগ্রামের গোপালপুর ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশ নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মোট নয়টি পদের বিপরীতে একটি গ্রাম থেকেই মা-ছেলে ও সহোদর দুই ভাইসহ সাতজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এদিকে, সাতজন গ্রামপুলিশ একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তাদের পক্ষে গোটা ইউনিয়নে পেশাগত কাজসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সহায়তার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গোপালপুর ইউনিয়নে গত দুই বছরে মোট সাতজন গ্রাম পুলিশ সদস্য অবসরে গেছেন। ইতোঃমধ্যে এসব শুন্যপদে নতুন লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়োগপ্রাপ্ত গ্রাম পুলিশ সদস্যকে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা হতে হবে। যদি কোন ওয়ার্ডে যোগ্য লোক পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে অন্য ওয়ার্ড থেকে নেয়া যাবে। কিন্তু এ ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে চাকরী প্রত্যাশীরা আবেদন করলেও শুধুমাত্র ৮ নং ওয়ার্ডের গড়মাটি গ্রাম থেকে সাতজন নারী-পুরুষকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন-গড়মাটি ঘাটপাড়ার রহিমা বেগম ও তার ছেলে আব্দুর রহমান রনি, গড়মাটি কদম তলার এলাকার তারেক ও তার ভাই তৌফিক, একই গ্রামের আলম, আম্বিয়া খাতুন ও এজাজুল ইসলাম। এসব গ্রাম পুলিশ সদস্যরা নিজ নিজ ওয়ার্ডে বাল্য বিবাহ বন্ধ, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ, বিভিন্ন সংবাদ আদান-প্রদান, ভাতাভোগীদের সংবাদ দেয়া, বিভিন্ন মামলার আসামীদের অবস্থানসহ তাদের গ্রেফতারে পুলিশকে সহায়তা দানসহ নানা ধরণের ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু একটি গ্রাম থেকেই সাতজনকে নিয়োগ দেয়ার ফলে বর্তমানে ইউনিয়নের মাত্র ১, ২ ও ৮ নং ওয়ার্ডে নয়জন গ্রাম পুলিশ রয়েছেন। এতে অবশিষ্ট ৬টি ওয়ার্ডে কোন গ্রাম পুলিশের বসবাস না থাকায় সেসব এলাকার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও রাতের বেলায় পুলিশকে কোন আসামীর বাড়িঘর চিনিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন কাজে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গোপালপুর ইউনিয়নের অজুর্নপুর গ্রামের বাসিন্দা সুবেল ভূঁইয়া জানান, আমি নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করলেও চেয়ারম্যানের প্রতিনিধির চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান বলেন, নিয়ম মেনেই এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এসব গ্রাম পুলিশ নিয়োগে ঠিক কি ঘটেছে তা আমি বলতে পারছি না, কারণ এসব নিয়োগের সময় আমি এ উপজেলায় ছিলাম না।