হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা মঙ্গোলিয়া বাড়ি আদিবাসী পল্লীর এক আদিবাসীর ঘর দরজাসহ আসবাবপত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দিল বন বিভাগের লোকজন।
শনিবার বিকেলে কালেঙ্গা রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা প্রেমানন্দ মিশ্রের নেতৃত্বে একদল বনকর্মী ও ভিলেজার মিলে আদিবাসীর ঘর ভেঙ্গে তার ঘরের সকল আসবাবপত্র ভাংচুর ও তছনছ করে।
এঘটনায় আদিবাসী এবং বনবিভাগের মধ্যে দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে এবং আদিবাসীদের মধ্যে আতংক ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বর্তমানে খোলা এ ঘরেই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করছেন আদিবাসী ঐ পরিবার।
আদিবাসীরা জানায় কালেঙ্গা রেঞ্জের বিভিন্ন বনবিট এলাকায় শত বছর ধরে সাড়ে ৩শ আদিবাসী পরিবার বসবাস করে আসছে। এর মধ্যে মঙ্গোলীয়া বাড়িতে ৭০/৭৫টি পরিবার বসবাস করে। বর্তমানে সেখানে পরিবারের লোকজন বৃদ্ধির কারণে ঘরবাড়িও বাড়তে থাকে। সম্প্রতি পল্লীর পরেশ দেববর্মার ছেলে মিলন দেববর্মা তার পরিবার নিয়ে আলাদা বসবাসের জন্য আলাদা ঘর তৈরী করে বসবাস শুরু করে কিন্তু কালেঙ্গা বন বিভাগ তাদের ঘর তৈরীর কারণে আদিবাসীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং তার ঘর ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেয়।
শনিবার বিকেলে কালেঙ্গা রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাউদ্দিনের নির্দেশে বিট কর্মকর্তা প্রেমানন্দ মিশ্রের নেতৃত্বে একদল বনকর্মী ও ভিলেজার স্বপন মিয়ার নেতৃত্বে লোকজন মিলন দেববর্মার ঘর ভেঙ্গে ফেলে এবং তার ঘরে থাকা মালামালা, আসবাবপত্র ও দরজা জানালা ভাংচুর করে। তারা মিলন মিয়াকে আর কোন প্রকার ঘর তৈরী না করার জন্য হুমকি দিয়েছে।
এঘটনায় আদিবাসীদের মধ্যে আতংক দেখা দেয় এবং আদিবাসীরা স্থানীয় কালেঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে বিজিবি সদস্যরা তাদের বাড়িতে এনে দেয়।
এবিষয়টি আদিবাসী নেতা অঘুদেব বর্মা স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। কিন্তু বনবিভাগ আদিবাসী এ পরিবারকে পল্লীতে আর ঘর করতে দিবে না এ হুমকি দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত তিন বছর আগে কালেঙ্গা বন বিভাগের সাথে আদিবাসীদের দ্বন্ধের কারণে এবং বন বিভাগ তাদেরকে হুমকির কারণে শতাধিক পরিবার ভারতে চলে যেতে চেয়েছিল সীমান্তে গিয়ে তারা বিএসএফের বাধার সম্মুখীন হলে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন বিভাগের সহযোগিতায় তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।