ময়মনসিংহের নান্দাইলে সেই ধর্ষক চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করছে র্যাব। বিয়ের পর স্ত্রী ধর্ষিতা বিষয়টি জানতে পেড়ে নববধুকে তালাক দেয় তার স্বামী। ধর্ষিতার সর্ম্পকে চাচাতো ভাই সে। তার একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হলে প্রাণনাশের ভয়ে তা চেপে যায় কিশোরী। পরিবারের পছন্দে ধর্ষিতা কিশোরীকে অন্যত্র বিয়ে দিলেও ক্ষিপ্ত ধর্ষক বরকে জানিয়ে দেয় যে,তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন সে।
এ ঘটনার চার দিন পরই নববধূকে তালাক দেন বর। লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও ওই কিশোরীকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কাদিরপুর গ্রামে। থানায় মামলার প্রায় এক মাস পর ওই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৪-এর একটি দল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষককে নান্দাইল থানায় স্থানান্তরের পর আজ শুক্রবার গ্রেফতারকৃতকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ওই গ্রামের অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পাশের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মো. ফজলুল হক ফজলুর ছেলে মো. বকুল মিয়ার (৩০)। বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন সে । এর মধ্যে ওই কিশোরীর বিয়ের কথাবার্তা চলে একই গ্রামের মো. খাইরুল ইসলামের সঙ্গে। আর এতে ক্ষিপ্ত হন প্রেমিক বকুল মিয়া। বিভিন্ন অপবাদ ছড়িয়ে বিয়ে বন্ধ করতে পারেননি।
এ অবস্থায় কিশোরী শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার ১৩ দিন পর স্থানীয় বাজারে কিশোরীর বরের দেখা পায় বকুল মিয়া। একপর্যায়ে বর খাইরুলকে লোকচক্ষুর আড়ালে ডেকে নিয়ে বকুল মিয়া জানায়, তার স্ত্রীকে সে ধর্ষণ করেছে। এর একাধিক প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। এ ঘটনার পর সংসার ভাঙার উপক্রম হলে উভয় পক্ষই এক সালিসের আয়োজন করে। পরে স্থানীয় সালিসে বকুল অকপটে জানিয়ে দেন, ওই কিশোরীর শরীরে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের চিহ্নের কথা। পরে সালিসের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে কয়েকজন নারীর হস্তক্ষেপে কিশোরীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে যাচাইকালে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ধরনের সত্যতার কথা স্বীকার করেছেন সালিসে থাকা একাধিকজন। পরে সালিস থেকেই তালাকের সিদ্ধান্ত হয়।
এ ঘটনার পর গত ১৬ অক্টোবর ওই কিশোরী বাদী হয়ে প্রেমিক বকুল মিয়াকে অভিযুক্ত করে নান্দাইল থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। র্যাব-১৪-এর একটি দল গত বুধবার ধর্ষক বকুল মিয়াকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নান্দাইল থানায় হস্তান্তর করে। বিষয়টি এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলে।