প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকারি খাতায় নাম ওঠেনি গোলাম মোস্তফা কামালের। মৃত্যুর ২৮ বছর পরে এসে কলম ধরেছি। লিখতে বাধ্য হয়েছি। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা সরদার পাড়া গ্রামের মরহুম কায়েম উদ্দিন মোল্লার ছোট ছেলে গোলাম মোস্তফা। ১৯৩১ সালে এই গ্রামেই জন্মগ্রহন তার। তিনি সরকারি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন আনসার কমান্ডার। তিনি নিজেই একজন প্রশিক্ষক ছিলেন।
সাঁথিয়া উপজেলা মুক্তিযুদ্ধকালীন স্থানীয় কমান্ডার নিজাম উদ্দিন এবং ৭নং সেক্টরের মেজর কাজী নুরুজ্জামান এর অধিনে কাজ করেছেন তিনি। তথ্য বহুল এই মুক্তিযোদ্ধার নাম স্বাধীনতার উনপঞ্চাশ বছরেও লেখাতে পারেনি তার পরিবার। আবেগে জল এসেছে আমার চোখের কোণে। আর মুক্তিযোদ্ধা বাবার সব ছেলের বুকে বেঁজেছে তার করুণ সুর। পরিবারের বুক ফেটে,গলা চিরে, চোখ বেয়ে ক্রোধান্বিত তীর্যক ফলনে ঝরেছে আক্রোশ। কারণ স্বাধীনতার জন্য যিনি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে গেছেন তিনি আজ উচ্ছিষ্ট কিছু লোকের চোখে। সেজন্যই আজকের লেখার সুত্রপাত। কবি নজরুল দেখেছেন সব। নিজের হাতের অস্ত্রে বারুদের গন্ধে মেখেছেন নিজের ঘাম। তাই তাঁর কলমেও ছিল জীবনের বিদ্রোহ। আমার আছে কেবল উপস্থাপন।
তাই কারো মরমে স্পর্শ না করুক কিন্তু অনেকের অজানা মানুষটি হারিয়ে যাবার পরও তাঁর পরিবারের সব কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনলাম। যুদ্ধোত্তর মুক্তিযোদ্ধার সেই তেজ আর নেই। তবে তাঁর নাম শুনেই গায়ের জোরে সবাই তাঁর নাম সরিয়ে রেখেছেন ইচ্ছের ভুলেভালে। কিন্তু মৌখিক স্বীকৃতি মেলে কদাচিৎ। সমাজের আষ্টে পড়া চোখে অসহায় হয়ে গেছেন তাঁর সন্তান পরিবার পরিজন। কোথাও গিয়ে কিচ্ছু করতে পারছেন না। আমিও সংকুচিত হয়ে থাকি যেন অতিরঞ্জিত কিছু বলে উপহাসের পাত্র না হই। সেজন্যই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার লেখা বা কলমের ব্যবহার চলে ঠিক কলম মেপে মেপে। যতটুকু বিশ্বাস করি, কখনও বা কিছু প্রমাণও পাই এবং অনুভব করি তার চেয়েও বেশি।
সবার কাছে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ও স্বীকৃতি না পেলেও নিখুঁত খাঁটি হয়ে গুমরে চলেছে তাঁর পরিবার সন্তানদের অন্তর। আর আমি তাঁর সন্তানের আসন হতে এই মরহুমের শেষ প্রাপ্তির গল্প শোনাচ্ছি। ৪০ বছর বয়সে ১৯৭১ সালে তিনি মেজর কাজী নুরুজ্জামান এর সাথে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেন গোলাম মোস্তফা কামাল এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যুদ্ধে যোগদান করেন ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ সালে বর্তমান বেড়া উপজেলার নগরবাড়িতে। সর্বশেষ যুদ্ধকালীন এলাকা ১৯ এপ্রিল ১৯৭১ সালে সাঁথিয়া উপজেলার শহিদ নগর ডাব বাগানে। আজ শুধু একটাই কামনা ২০২০ সালে গত হওয়া এই মরহুমের কবরে গিয়ে কেউনা যেন বলে ফেলুক, প্রিয় মুক্তিযোদ্ধা,তোমার নামটা হয়তো ভুল করে এখনও সরকারি খাতায় ওঠেনি। এতে তদবির লাগে, লাগে খরচাপাতি। তাতে নামটা সরকারী খাতায় উঠবে। যাতে তোমার উচিত অংকের ভাতা পাবার সুযোগ হবে। জীবন হতে নেওয়া গল্পের নির্মমতাই এটা। জাতির নির্লজ্জতার গল্প কিনা জানি না। তবে দৃশ্যপট বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়।
তখনও সকাল হয়নি। রাতভর চিন্তা ও সঙ্কায় ঘুম হয়নি যাঁর, তাঁরই বদৌলতে শেষে কিনা রাজাকারদের ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হলো এক নিমিষেই। তার নাম গোলাম মোস্তফা কামাল। বাবা-মার পুত্রের বুকের পাটায় এত জোর ছিল সেটা হয়তো বাবা-মা জানতেনই না। প্রয়োজনের অস্ত্রের গর্জনই সব বলে দিল। ১৯৭১ সাল যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মেজর কাজী নুরুজ্জামান এর নেতৃত্বে শক্তিশালী দলটিতে গোলাম মোস্তফা কামাল ছিলেন অকুতোভয় ও অত্যন্ত মেধাবী সৈনিক। এমনকি তাঁর দলের মধ্যে একমাত্র তিনিই অস্ত্র পরিচালনা জানতেন, যা ঐ সমকালীন সময়ে প্রচন্ড ভাবে দরকার ছিল। পরে তিনিই অনেককেই প্রশিক্ষণ করিয়েছেন নিজ হাতে তৈরি করেছেন শতশত মুক্তিযোদ্ধা ।
পাকিস্তান আনসার বাহিনীর চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতা সেদিন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই কাজে লেগে গেল। একদিন তাঁর বাড়ির দক্ষিণ পাশ দিয়ে বর্ষায় নৌকায় করে আগ্নেয়াস্ত্র সহ যাচ্ছিল একটি রাজাকারের দল। একই গ্রামের গোলাম মোস্তফা কামালসহ সংগঠিত মুক্তিযোদ্ধারা ঘিরে ফেললো তাদের। বাধ্য করবে তাদের আত্মসমর্পণ করতে অথবা মরতে। সমস্যাটা অন্যখানে। মুক্তিযোদ্ধাদের দলে প্রয়োজনীয় অস্ত্র থাকলেও কেবল গোলাম মোস্তফা কামাল ছাড়া কেউই তা পরিচালনা করতে জানতেন না। শেষে তাঁরই রাইফেল হতে ছোটে গুলির বর্ষণ। এতেই ভড়কে যায় রাজাকাররা।
এখনও জীবিত সহ-মুক্তিযোদ্ধা ও রাজ সাক্ষীদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী (গেজেট নং ২২৬১)। মোহাম্মদ দৌলত হোসেন, (গেজেট নং ২১৮৪) রেজাউল করিম (গেজেট নং ১২১৬) সহ অনেকেই পাবনার সাঁথিয়ায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনার সহজ বর্ননা দেন। দিন বদলের যুগে এসে আজ অনেক গোলাম মোস্তফা কামালের নাম সরকারি খাতায় ওঠে না। মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি সার্টিফিকেটের জন্য তাঁর স্ত্রী আলেয়া খাতুন ৬ই মে ২০১৪ সালে নিজাম উদ্দিন বরাবর আবেদন করেন।
কত যে পায়ের জুতা ক্ষয় হয়েছে তা কেউ জানে না। বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম গোলাম মোস্তফা কামালের সন্তান সাংবাদিক বাকী বিল্লাহ জানান, এলাকার মুরব্বিদের কাছে জানতে পেরেছি তখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ অস্ত্র চালনাসহ যুদ্ধ করার কৌশল শেখার জন্য ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে, সেই সময়ে আমার আব্বা (গোলাম মোস্তফা কামাল ) ভারতে গিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ নিতে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় স্থানীয় প্রশিক্ষণ শিবির থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে নিজ এলাকায় মেজর কাজী নুরুজ্জামান এর অধীনে যোগদেন শুরু করেন যুদ্ধ। আজ আব্বার সহযোগী সবাই “বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা” কিন্তু কোন লিস্টে আব্বার নামটিও নেই। লিস্টে নাম ওঠানোর জন্য আব্বা যুদ্ধ করেননি। তিনি যুদ্ধ করেছিলেন এই কারণে যে আমার বা আমাদের জন্ম যেন অভিশপ্ত পাকিস্তানের পতাকা তলে না হয়। কথাগুলো বলতে বলতে গলা জড়িয়ে যাচ্ছে বার বার। আমি আদ্রতার স্বাদ পাচ্ছি। আমি বললাম, সে সময়ে সবাই একই মানষিকতা নিয়ে লড়েছেন। আজ দিন বদলে গেছে। দৌড়াদৌড়ি না করলে কেউ জানতেও চায় না, কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে মুক্তিযোদ্ধা নন। এমন তো হবার কথা ছিল না। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট জাতি হারিয়েছে তার আর্কিটেক্ট পিতাকে।
তারপরে অনেকবার সামরিক শাসনের যাতাকলে পিষ্ঠ হয়েছে দেশের অসংখ্য মুক্তিসেনারা। জীবনের বিনিময়ে স্বাধীন করা দেশটা এমন হয়ে গেল কেন? এমন হবার কথা কি সত্যিই ছিল? ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু বারুদের গন্ধ যাকে টেনেছিল, তিনি কি করে বসে থাকবেন খালি হাতে? তাই বাড়িতে এসে সাঁথিয়া থানা এবং বেড়া থানার আনসারদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে লেগে যান। এই কাজ চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত। আমার আব্বা গোলাম মোস্তফা কামালের তিনজন সহ প্রশিক্ষার্থীর নাম শহিদ মিন্টু, (পাটগাড়ি সাঁথিয়া) স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। মোহাম্মদ আলী, (তলট সাঁথিয়া)। আবু সামা (তলট সাঁথিয়া)। আর যুদ্ধের নয় মাসের অবদান বিস্তারিত বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তাঁর স্বীকৃতি ও সমাধান নিয়ে আছে বিস্তর বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। তা যে কতটা নির্দয় ও যাতনার সেটা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন। কিন্তু আজ আমার ভাষা হারিয়ে গেছে ভাই। সমাজে আর পাঁচটি পরিবারের মধ্যে আমাদের পার্থক্য কেবল কদরে। কদরটা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার বলে প্রমাণ হয় মৌখিক গল্পে। হয়তো কোন পৌরাণিক গল্পের মত খুব বয়স্কদের মুখে। এইটুকুই যা সরকারী খাতায় নয়। শুনেছি সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ভাতা দেওয়া হয়। ভাতার ঐ টাকা দিয়ে কি হবে যদি না পাই আব্বার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। ওটা তাদের লাগবে যারা ঐ ভিক্ষেটা খেতে নিজেরা মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম লিখিয়েছে। আমরা মা ভাইবোনেরা নিজেরা গিয়ে এখন সে ভিক্ষে নেব কেন? নিজেকে ওর জায়গায় নিয়ে গেলাম।
ওর মলিন মুখটি, পুড়ে যাওয়া মনের ক্ষতটি, আকাশে বাতাসে ওর আব্বার অতৃপ্তি আত্মাটির অভিসম্পাত বুঝতে পেলাম। আহ্, এমন দিনও বংশ পরম্পরায় বয়ে বেড়াতে হয়? আমার কলমের কালিতে আজ হয়তো পুরোটা বোঝানো যাবে না। হঠাৎ একটি গানের কলি খুব মনে পড়ে গেল। এই গানের কথাগুলিই হয়তো এখানে সবচেয়ে বেশি করে খেটে যাবে। কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় জলে সিক্ত/ কত প্রদ্বীপ শিখা জ্বালালে জীবন আলোয় উদ্দীপ্ত/ কত ব্যথা বুকে চাপালে তাকে আমি বলি ধৈর্য / নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ / চিৎকার করে কাঁদতে চাহিয়া করিতে পারি না চিৎকার / বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার। পুরো গানটা ইউটিউবে কয়েকবার আমি শুনলাম রিপ্লাই করে করে। আসলেই আমরা জাতি হিসেবে কতটা নির্লজ্জ তা এই গানে খুব স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন গায়ক ও গীতিকার হায়দার হোসাইন। ৭ই মার্চে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের কথা বার বার উঠে আসলো কথপোকথনে। কথা তখনও চলছে। সে ভাষণের প্রতিটি শব্দের ভাইব্রেশন আজও বাতাসে ভাসে। সেই সাথে আমার চোখে ধোঁয়াশার মত ভাসতে থাকলো নাম না জানা আরও কত গোলাম মোস্তফা কামাল। যাঁদের খবর কেউ রাখে না অথবা খবর রাখার জন্য নিজেদের বুকটা ভারি করতে চান না।
আব্বার মৃত্যু হয়েছে ১৯৯২ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি। আর এখন ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই বিজয় দিবস। আমি সাঁথিয়া উপজেলার তলট গ্রামের একজনকে ফোন করে আব্বার কথা বলতেই তিনি আমাকে বাড়িতে যেতে বললেন। কারণ তিনি নিজেই আব্বাকে সবিস্তারে জানেন। আমার আব্বার হাতে অনেক মানুষ অস্ত্র-চালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার আগেই। বর্তমানের বহু নেতা ও তাদের পৌষ্যজনেরা অস্ত্র চালনোতো দূরের কথা বন্দুকের ট্রিগারে জীবনে একটি বারের জন্যও টিপ মেরেছে কিনা সন্দেহ আছে। শুনেছি মানুষের কাছে নিজেকে দাবি করতেন “সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা” হিসেবে।
পরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ রেখে তারাই হয়ে যান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। আমি বলবো এরাই প্রকৃত “চুক্তিযোদ্ধা”। আর কত আফসোস শুনতে চান? যদি কিছু বলতেই হয়, তবে আমিই অতি বিনয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। যে ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধের চাক্ষুষ প্রমাণ আছে, সাক্ষী আছে, আছে দাবি। আছে সত্যিকারের সঠিক মর্যাদা পাবার অধিকার। কিন্তু স্বীকৃতি আর মেলে না। সমাজে কোন স্বীকৃতি নেই অথচ আছে পুরোনো একটি বেড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম আমীর আলীর স্বাক্ষরিত একটি সার্টিফিকেট। সাঁথিয়া উপজেলা যুদ্ধকালীন কমান্ডার মরহুম নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্র ছাড়া আর কপালে কিছুই জোটেনি।
অনেকে হয়তো ভাবেন সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায়। এটা তারই একটি কপি কিনা কে জানে। শেষ সম্বল বেড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম আমীর আলীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি হয়তো এই মহান মুক্তিযোদ্ধাকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার হাত হতে মান বাঁচালো। যার প্রমাণ ছবিতে দিয়ে রাখলাম যেন রাজসাক্ষী হয়ে থাকে সারা জীবন। জীবনে কারো জন্য কতটুকু করতে পেরেছি তা জানি না। তবে এই পরিবারের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সদয় জ্ঞাপন করেন তাহলে আমার চেয়ে আর কে বেশি খুশি হবেন? কাউকে আঘাত করতে নয় বরং কারো বুকের আঘাত তাঁর পরিবার সারা জীবন বয়ে যাবে কিন্তু কেউ জানবে না, তা কি করে হয়? পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত হতে কিছু করতে চাইলেই করা যায়। আর আমিও তাদের বোবা কান্নার চিৎকার শুনে সমাজের বিবেকবানদের বিবেক নাড়াবার না হয় খানিক দূর্বল চেষ্টাই করলাম। সামান্য আঁচড়ে অবিভাজ্য শ্রীতে কষ্ট না হয় বাড়ুক সমাজের। বেড়ে বেড়ে ফুলে ফুঁসে উঠুক না হয় বোবা কান্না হাহুতাশ। রেহাই পাক দেশ স্বাধীন করার পরের অতৃপ্তি আত্মার করুন চিৎকার। যেন জাতির নির্লজ্জতা আর প্রকাশ না পায়।