সাতক্ষীরার তালায় জাতপুর-তালা-খেজুরবুনিয়া সড়ক মেরামতের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। ঠিকাদারের ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে অভিযোগ এলাকাবাসির। এছাড়া সড়ক মেরামতের কাজে লাগানো হচ্ছে আমা ও দেড় নং ইট। সিডিউল অনুযায়ী কোনো কাজই হচ্ছে না।আর ঠিকাদারের প্রভাবের কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ ঐ কাজের তদারকিও করেন না। এনিয়ে এলাকাবাসি অভিযোগ তুললেও কোনো কাজে আসছে না।
সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে তালা-জাতপুর ভায়া খেজুরবুনিয়া সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। এই কাজে প্রায় ৯৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তালার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মো: কোহিনুর ইসলাম মোড়লের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মেসার্স সৈকত এন্টারপ্রাইজ এই সড়ক মেরামতের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, সড়ক মেরামতের সময়ে হ্যাজিং করে তার পরে হ্যারো (রাস্তা খুড়তে) করতে হবে। এরপর রোলিং করে ভালো ভাবে বালি দিয়ে খোয়া দিতে হবে। কিন্তু হ্যারোর পরে তেমন কোনো বালি দেওয়া হয়নি। ওর পরেই খোয়া দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া খোয়া দিয়ে সড়কে শেষবার রোলার করার পরে বালি দেওয়ার কথা না থাকলেও পর্যাপ্ত বালি দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাজ শুরুর থেকে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে ওই প্রভাবশালী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তার প্রভাবের কারনে তালা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের কেউ কথা বলেন না। এমনকি তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীও সাইট পরিদর্শনে আসেন না।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারের ছেলে সৈকত বাবার প্রভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সড়কের কাজ নিয়ে কেউ কথা বললে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। যে কারণে কেউ কথা বলছেন না। রবিবার সকালে ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে রাখা আছে আমা ইট। এদিয়ে কাজ চলছে। রোলারও করা হচ্ছে না ঠিকমতো। যেনতেন কাজ করে বিল উত্তোলনের চেষ্টা করছে ঠিকাদার।
এসময় কথা হয় মোড়ল সিরাজুল ইসলাম’র সাথে। তিনি বলেন, এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে এই সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। তবে কাজটি বাস্তবায়ন হচ্ছে খুবই খারাপ। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছেন তিনি। আরেক পথচারী নজরুল ইসলাম বলেন, কাজ তো না, লুটপাট করা হচ্ছে। এনিয়ে কথা বললে তার ছেলে নানা ভাবে গালিগালাজ করে। এমন অভিযোগ করিম মোড়ল, ইব্রাহিম হোসেন, বিল্লাল হোসেনসহ আরও অনেকের।
এনিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের মালিক মোড়ল কোহিনুর ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, কাজটি সুষ্ট ভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তালা উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী বিজন কুমার মন্ডল জানান, তার হাতে কাজের চাপ থাকায় তিনি কাজ তদারকি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে তিনি নিম্মমানের কাজ হচ্ছে বলে শুনেছেন এবং খারাপ ইটের খোয়া সাইট থেকে অপসারণ করতে বলা হয়েছে। তবে তিনি অপসারণ করেছে কিনা বিষয়টি তার জানা নেই।
তালা উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের প্রকৌশলী মজিদ মোল্ল্যা জানান, তার কাজের মান খারাপ হওয়ায় ইট অপসারণ করতে বলা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তরের সাতক্ষীরা জেলা প্রকৌশলী নারায়ন চন্দ্র সরকার জানান, কাজের অনিয়মের বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে প্রমান পেয়েছি। তাদের খারাপ মালামাল অপসারণ করতে বলা হয়েছে।