November 22, 2024, 9:35 pm
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

মারিৎজা যুদ্ধের ইতিহাস আটশত অটোমানের কাছে সত্তর হাজার ক্রুসেডারের পরাজয়

বাকী বিল্লাহ, (পাবনা) জেলা প্রতিনিধি:
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
  • 341 দেখুন

বাকী বিল্লাহ, (পাবনা) জেলা প্রতিনিধিঃ

যে সকল সাম্রাজ্যের উপাখ্যান ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অটোমান সাম্রাজ্য অন্যতম। ওসমান গাজির হাত ধরে এমন একটি সময়ে অটোমান সাম্রাজ্যের বীজ বুনন হয় যখন মোঙ্গল তাণ্ডবে জ্বলছে অর্ধেক পৃথিবী। পাশাপাশি সে সময়টাতে চলছিল মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যকার ধর্মযুদ্ধ ক্রুসেড। মোঙ্গল আক্রমণে আব্বাসীয় খিলাফতের পতন হলেও আরব’সহ এশিয়া মাইনরের বিভিন্ন অঞ্চলে বাইজেন্টাইন খ্রিস্টান সাম্রাজ্যের পাশাপাশি টিকে ছিল মুসলমানদের সেলজুক সাম্রাজ্য। তবে ক্ষমতার দিক বিবেচনায় সেলজুক সাম্রাজ্য পূর্বের উমাইয়া বা আব্বাসীয় খিলাফতের মতো ছিল না।

সেলজুক সম্রাট আলাউদ্দিনকে একটি খণ্ড যুদ্ধে সহায়তার পুরস্কার হিসেবে আরতুরুল কিছু জমি পান জায়গির হিসেবে। আরতুরুলকে যে জমিটি দেওয়া হয় সেটি ছিল মূলত আনাতোলিয়ায় সেলজুক সাম্রাজ্যের শেষ সীমান্ত ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শুরু। কয়েক বছর পরই আনাতোলিয়ায় সেলজুকরা প্রভাব হারাতে শুরু করে। আরতুরুলের মতো যাযাবর ও ঘুজ গোত্রের বাকি গোত্র প্রধানরাও সেলজুকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে। একসময় সেলজুকরা আনাতোলিয়ায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং ক্রমেই স্বাধীন হয়ে ওঠেন আরতুরুল এবং পরে তার ছেলে ওসমান গাজি।

অত্যন্ত বিনয়ী ও বীর যোদ্ধা ওসমানের নিয়ন্ত্রিত এলাকা দিনকে দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। তার বিজয়ের ধারা বজায় রাখে তার বংশধরেরা। ওসমান গাজির সাম্রাজ্যের বীজ একটি বৃহৎ বৃক্ষে রূপ নেয় যা পরবর্তীকালে ওসমানীয় বা অটোমান সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিতি পায়। তবে আজ সেই বিষয়ে আলোচনা করব না। আজ অটোমানদের এমন একটি যুদ্ধের কথা জানানো হবে যে যুদ্ধে আটশত অটোমান যোদ্ধার কাছে পরাজিত হয় সত্তর হাজার ক্রুসেডার। ইতিহাসে যুদ্ধটি সেকেন্ড ব্যাটেল অব মারিৎজা বা মারিৎজার দ্বিতীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত।

পটভূমি

১৩৫২ সালের পর আনাতোলিয়ায় বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করে নেয় অটোমানরা। ওদিকে আবার সার্বিয়া-বসনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, দক্ষিণ হাঙ্গেরীসহ গ্রিসের (বলকান অঞ্চল) কিছু অংশ নিয়ে গড়ে ওঠে সার্বিয়ান সাম্রাজ্য। এ বিষয়ে বলে রাখা ভালো, সার্বিয়ান সাম্রাজ্য’সহ ইউরোপের অধিকাংশ খ্রিস্টান শাসকরা ছিল ক্যাথলিক খ্রিস্টান, অন্যদিকে রোমান বাইজান্টাইনরা ছিল অর্থোডক্স খ্রিস্টান। তখনও প্রটেস্ট্যান্ট চার্চের জন্ম হয়নি। ক্যাথলিকরা মুসলিমদের যতটা ঘৃণার চোখে দেখত ঠিক ততটাই অর্থোডক্স খ্রিস্টানদেরও। ফলে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য যেমন অটোমানদের তোপের মুখে ছিল, তেমনি সার্বিয়ানদেরও। অটোমান ও সার্বিয়ান সাম্রাজ্যের এমন তোপের মুখে বাইজেন্টাইনদের টিকে থাকাই ছিল প্রায় অসম্ভব। আবার বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তো ছিলই। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের এই দুর্বলতা গুলো বেশ ভালোভাবে কাজে লাগায় অটোমানরা।

১৩৫৫ সালে, আনাতোলিয়া ও বলকান অঞ্চলের ম্যাপ। বাইজেন্টাইনরা অটোমানদের মিত্রতার প্রস্তাব দিলে অটোমানরাও কৌশলগত মিত্রতা গ্রহণ করে। এর ফলে যা হয়, অটোমানরা প্রথম বারের মতো ইউরোপে প্রবেশ করে এবং বাইজেন্টাইন সম্রাটের মিত্র হিসেবে সার্বিয়ানদের সাথে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে জয়লাভ করে। আধুনিক সার্ব বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজি যোদ্ধাদের সফলতার প্রভাবে সমগ্র ইউরোপে অটোমানরা আতঙ্ক রূপে আত্মপ্রকাশ করে। এতে করে সার্ব এবং বাইজেন্টাইন- উভয় শাসকরাই বুঝতে পেরেছিল, বলকান অঞ্চলে খুব শীঘ্রই অটোমানরা প্রবেশ করবে, একদম পাকাপাকি ভাবে, তবে তখন হয়তো তারা আসবে ইউরোপ জয় করতে, কারো মিত্র হিসেবে নয়।বাইজেন্টাইনদের সাথে অটোমানদের মিত্রতায় ফাটল ধরে অটোমানরা ইউরোপের প্রবেশ দ্বার গাল্লিপলি ক্রুসেডারদের কাছ থেকে দখল করে নিলে, বাইজেন্টাইন সম্রাট গাল্লিপলির দখল ফেরত চাইলে অটোমান সুলতান ওরহান তাতে অস্বীকৃতি জানান। গাল্লিপলি জয়ের মাধ্যমেই অটোমানদের সামনে ইউরোপের দরজা খুলে যায়।

মারিৎজার যুদ্ধ এবং সুলতান মুরাদ
১৩৫৯ সাল, সুলতান মুরাদ অটোমান সালতানাতের সিংহাসনে বসলেন। ওসমান গাজির ছোট্ট আমিরাত আনাতোলিয়া ছাড়িয়ে এবার ইউরোপের দিকে ক্রম বর্ধমান। মুরাদ ছিলেন দাদা ওসমান ও বাবা ওরহান গাজির মতোই বীর যোদ্ধা, সেই সাথে চমৎকার রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সিংহাসনে বসেই মুরাদ সালতানাতের অভ্যন্তরীণ সংস্কার কার্যে মনোনিবেশ করেন। গড়ে তোলেন দুর্ধর্ষ জানিসারী বাহিনী, যে বাহিনী পরবর্তীকালে ছয়শত বছর দাঁপিয়ে বেড়িয়েছিল ইউরোপ থেকে পুরো মধ্য-পৃথিবীর আনাচে-কানাচে। ভূমি আইন সংস্কার, পুরো সালতানাতের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ’সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের পাশাপাশি ভীষণ দক্ষ হাতে বৃদ্ধি করেন সাম্রাজ্যের সীমানাও।
সুলতান মুরাদ;

১৩৬২ সালের পর সুলতান মুরাদ বলকান অঞ্চলের অ্যান্ড্রিয়ানোপল, বুলগেরিয়া, মেসিডোনিয়া ও সার্বিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল জয় করে নেন। সে সময়টাতে তিনি বাইজেন্টাইন ও সার্বিয়ান সাম্রাজ্য থেকেও কর আদায় করা শুরু করেন। এমন অবস্থায় অটোমান সাম্রাজ্যকে দুটি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়। একটি আনাতোলিয়া (এশিয়া মাইনর), অন্যটি রোমেলিয়া (বলকান অঞ্চল)। আনাতোলিয়ার দায়িত্বে ছিলেন সুলতান নিজে, রোমেলিয়ার দায়িত্বে সুলতানের শ্রদ্ধাভাজন লালা শাহীন পাশা। ততদিনে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সার্বিয়ান সাম্রাজ্য বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। প্রভাবহীন হয়ে পড়েছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য। তবে অটোমানদের ধ্বংস করতে কূটনৈতিকভাবে একত্র হন সার্বিয়া-বসনিয়ার রাজা, বাইজেন্টাইন কাইজার ও হাঙ্গেরির সম্রাট। তবুও তারা সরাসরি অটোমানদের আক্রমণ করার মনোবল পাচ্ছিলেন না, এমন সময় তাদের দলে তুরুপের তাস হয়ে যুক্ত হন স্বয়ং পোপ। ৬০ বছর পর আবার ডাক আসে ক্রুসেডের। এবার প্রতিপক্ষ অটোমান, উদ্দেশ্য বলকান অঞ্চলের অটোমান রাজধানী অ্যান্ড্রিয়ানোপল দখল করে ওসমানীয়দের সমূলে ধ্বংস করে দেওয়া।

মারিৎজার ১ম যুদ্ধ

সার্বিয়ান রাজা ভুকাসিনের নেতৃত্বে প্রায় ত্রিশ হাজার ক্রুসেডার অ্যান্ড্রিয়ানোপলের দিকে যাত্রা শুরু করে। দু’সপ্তাহ পর কোনো বাঁধা ছাড়াই অ্যান্ড্রিয়ানোপলের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যায় ক্রুসেডার বাহিনী। এমন সময় সুলতান মুরাদ ব্যস্ত ছিলেন থ্রেস অঞ্চলে বাইজেন্টাইনদের সাথে যুদ্ধে, অন্যদিকে লালা শাহীন পাশা ছিলেন এশিয়া মাইনরে। ক্রুসেডারদের নেতৃত্বে থাকা রাজা ভুকাসিন ভাবলেন, এ সুযোগে হয়তো যুদ্ধ ছাড়াই অ্যান্ড্রিয়ানোপল জয় করে নিতে পারবেন। অ্যান্ড্রিয়ানোপলের মাত্র পনেরো কিলোমিটারের ভেতর মারিৎজা নদীর তীরে ক্যাম্প করেছে ত্রিশ হাজার ক্রুসেডার। গভীর রাত, ভুকাসিনের সৈন্যরা যুদ্ধ জয়ের পূর্বেই উদযাপনে ব্যস্ত, নারী আর মদ নিয়ে। লালা শাহীন পাশার গুপ্তচর ক্রুসেডারদের প্রত্যেকটি গতিবিধি খেয়াল রেখেছে। গুপ্তচরদের তথ্য অনুযায়ী শাহীন পাশাও এগিয়ে আসছেন দশ হাজার সৈন্য নিয়ে। ক্রুসেডার বাহিনীকে কিছুতেই অ্যান্ড্রিয়ানোপলে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। দশ হাজার যোদ্ধা যখন মারিৎজার তীরে পৌঁছাল, ততক্ষণে মাতাল ক্রুসেডাররা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
মারিৎজার যুদ্ধ।

“হাইদির আল্লাহ”! গাজিদের বিকট চিৎকারে ঘুম ভাঙে ক্রুসেডারদের, গাজিরা কখনোই ঘুমন্ত শত্রুর উপর আক্রমণ করে না, তাই চিৎকার দিয়ে সতর্ক করে দিল। ক্রুসেডার শিবির জেগে উঠেছে, আকস্মিক আক্রমণের শিকার হয়ে তারা ভাবল, সুলতান মুরাদ হয়তো বিশাল বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করেছেন। উপায় না পেয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে শুরু করে ক্রুসেডাররা। যারা অস্ত্র তুলে নিয়েছিল, তারাও শাহীন পাশার কাছে পরাজিত হয়। কিছু গাজি যোদ্ধাও মৃত্যুবরণ করে, রক্ষা পেয়ে যায় অ্যান্ড্রিয়ানোপল।

মারিৎজার ২য় যুদ্ধ

১৩৭১ সাল, রাজা ভুকাসিন নিজের সৈন্যদলকে পুনরায় সংগঠিত করেছেন। একে তো অটোমানদের আকাশচুম্বী প্রভাব মানতে পারছিলেন না, তারপর আবার মারিৎজার পরাজয়। ভুকাসিন এখন অধিক সতর্ক, গোটা বলকান অঞ্চল এবার তার সাথে, বৃদ্ধি পেয়েছে সৈন্যদল। পূর্বে সৈন্যসংখ্যা যেখানে ত্রিশ হাজার ছিল, এবার সত্তর হাজার সেনাবাহিনী নিয়ে অটোমানদের আক্রমণ করবেন। ভুকাসিন নিশ্চিত, এবার নিশ্চয়ই সুলতান মুরাদ আসবেন অ্যান্ড্রিয়ানোপল রক্ষা করতে। তিনিও তা-ই চাইছেন, সুলতান এলে যুদ্ধ জয়ও হবে, সেই সাথে সুলতানকেও হত্যা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া যাবে অটোমান সাম্রাজ্য।
মারিৎজা নদী উপত্যকা।

২৭ সেপ্টেম্বর, ১৩৭১। আবারো মারিৎজার তীরেই ক্যাম্প করেছে ক্রুসেডাররা। সকাল হলেই বজ্রপাতের মতো গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে অ্যান্ড্রিয়ানোপল। এবার ক্রুসেডারদের গুপ্তচররাও খেয়াল রাখছে চারপাশে, যেন প্রথম বারের মতো অটোমানরা রাতের অন্ধকারে আক্রমণ করতে না পারে। সুলতান মুরাদ তার সেনা বাহিনীর বিশাল অংশ নিয়ে এশিয়া মাইনরে। এবারও ক্রুসেডারদের মনে আনন্দ। সুলতান অ্যান্ড্রিয়ানোপল পৌঁছাবার আগেই তারা আক্রমণ করবে, বিজয় নিশ্চিত। ক্রুসেডার শিবিরে চলছে আগাম জয়ের উল্লাস। এদিকে শাহীন পাশাও আগের বারের মতোই রাতের অন্ধকারে এগিয়ে আসছেন। তবে এবার তিনি যুদ্ধ জয়ের আশায় আসছেন না। শাহীন পাশা একজন চৌকস জেনারেল, স্বাভাবিক ভাবেই আটশত যোদ্ধা নিয়ে কোনো জেনারেল সত্তর হাজার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের জন্য লড়তে যাবেন না। তার পরিকল্পনা আটশত যোদ্ধা নিয়ে মারিৎজার তীরে শহীদ হবার, সাথে যতটা সম্ভব ক্রুসেডারদের ক্ষয়ক্ষতি করা যায়, যেন পরবর্তী কালে সুলতান এসে সহজেই অ্যান্ড্রিয়ানোপল পুনরুদ্ধার করতে পারেন। শাহীন পাশার এবারের যুদ্ধ কৌশল কিছুটা ভিন্ন, যেহেতু ক্রুসেডার বাহিনী সংখ্যা সত্তর হাজার, তাই আটশত গাজি বাহিনী নিয়ে সম্মুখে লড়া যাবে না বা আটশত জন একসাথে হয়েও অতর্কিত হামলা করা যাবে না, এতে ক্ষয়ক্ষতি খুব একটা হবে না। আটশত গাজি যোদ্ধা মারিৎজার তীরে একত্র হয়ে দুটো প্রধান দলে বিভক্ত হয় শাহীন পাশা ও এভ্রোনাস গাজির নেতৃত্বে। দল দুটো দুদিক থেকে আক্রমণ করবে। বড় দুটি দল আবার চার জনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। চার জনের একেকটি দল মাতাল হয়ে ঘুমিয়ে থাকা ক্রুসেডারদের তাঁবুর ভেতরে প্রবেশ করবে, এরপর “হাইদির আল্লাহ”! বলে চলবে আক্রমণ। তাঁবুর সবাইকে হত্যা না করা অবধি কেউ তাঁবু থেকে বের হবে না।
অটোমানদের সাথে ক্রুসেডারদের যুদ্ধ;

আক্রমণ শুরু হলো। মুহূর্তেই একেকটা তাঁবু যেন গোরস্থানে পরিণত হচ্ছিল। এভ্রোনাস গাজি ঢুকে পড়লেন ভুকাসিনের তাঁবুতে, কোনো বাধাই তাকে টলাতে পারল না, হত্যা করলেন ভুকাসিনকে। সেই সাথে শাহীন পাশার হাতে নিহত হন ডেস্পট উগলেসা। যতক্ষণে সব ক্রুসেডার জেগে উঠল, ততক্ষণে রাজা ভুকাসিন’সহ অনেক লর্ড মারা গিয়েছেন, মৃত প্রায় বিশ হাজার যোদ্ধা। এমন পরিস্থিতিতে বাকি ক্রুসেডার যোদ্ধারা আতঙ্কিত হয়ে চারদিকে পালাতে শুরু করে, ঝাঁপিয়ে পড়ে নদীতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া ক্রুসেডার বাহিনী পরাজিত হয়।শাহীন পাশার অসাধারণ কৌশল ও মনোবল, সেই সাথে ক্রুসেডারদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস সেদিন মারিৎজার তীরে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করেছিল। ইতিহাসে ব্যাটল অভ মারিৎজা যেমন গুরুত্বপূর্ণ গেরিলা যুদ্ধের একটি, তেমনি এ যুদ্ধ সার্বিয়ান সাম্রাজ্য ধ্বংসের মূল কারণও। মারিৎজার যুদ্ধজয়ের পরেই পুরো বলকান অঞ্চলে অটোমানরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102