পাবনার ঈশ্বরদীতে সুগার মিল বন্ধের প্রতিবাদে এবং চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই কার্যক্রম চালুর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আখ চাষী ও মিলের শ্রমিক কর্মচারীরা। পাবনার সুগার মিল বন্ধ হওয়ার ঘোষণার পর থেকেই দিশেহারা হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের আখ চাষীরা।
আজ মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে পাবনার ঈশ্বরদী-কালিকাপুর সুগার মিলের প্রধান ফটকের সামনে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ এবং পরে আখ চাষী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বলা হয়, আমাদের পাবনার আখ দিয়ে আমাদের সুগার মিল চলবে। অন্য কোথাও আখ দেয়া হবে না। যতদিন সুগার মিল চালু না হবে কর্মবিরতি দিয়ে শ্রমিক কর্মচারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন। চলতি মৌসুমে পাবনায় পাঁচ হাজার দুই শত একর জমিতে আখ চাষ করেছেন বলে জানান এখানকার কৃষকেরা। বিক্ষোভ সমাবেশে জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় কয়েক হাজার আখ চাষী সমাবেশে যোগ দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশ এলাকায় সকাল থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাবনা চিনিকল আখ চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী ডিলুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনিকল আখ চাষী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বাদশা। এসময় বক্তব্য রাখেন, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নায়েব আলী বিশ্বাস। উপজেলা আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মিন্টু। দাশুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বকুল। সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা। পাবনা চিনিকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সায়েদুল ইসলাম শাহিন। সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল। সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। সাবেক সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন। আখ চাষী নজরুল ইসলাম। কৃষক নেতা মুরাদ মালিথা প্রমুখ।
উল্লেখ্যঃ ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীতে দাশুরিয়া মৌজায় ষাট একর জমির উপর পাকিস্তান সরকারের আর্থিক সহোযোগিতায় “পাবনা সুগার মিল” প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে আখ মাড়াই মৌসুমে মিলটি পরিক্ষামুলক ভাবে চালু হয়। ছয়মাস মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়নি। ছয়শত পঞ্চাশ জন শ্রমিক কর্মচারীর বেতন বাবদ মিলের কাছে ছয় কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। ঈশ্বরদীতে এবছর প্রায় পাঁচ হাজার কৃষক তাদের জমিতে আখের চাষ করেছেন। এখন আখ কাটার উপযোগী হয়ে উঠেছে। মিলটি বন্ধ থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান সমাবেশে অংশগ্রহণ কারীরা।