গাইবান্ধায় বিয়ের দুদিন পর সাদিয়া (১৮) নামে এক নববধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
২৫ জানুয়ারি সোমবার সকাল আটটার দিকে সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের তিনদহ গ্রামের পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাদিয়া তিনদহ গ্রামের মৃত নরসুন্দর আব্দুস সালামের চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সাদিয়া সবার ছোটো এবং একমাত্র মেয়ে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জান্নাতি বলেন,মাত্র দু’দিন আগে ২৩ জানুয়ারি শনিবার রাতে নিহত সাদিয়ার বিয়ে হয় বাদিয়াখালি ইউনিয়নের রিফাইতপুর গ্রামের শাহাবুল ইসলামের ছেলে আবু তাহেরের সঙ্গে।
রবিবার তাহের নব বধূকে নিয়ে শশুর বাড়ি তিনদহ গ্রামে আসেন।
সোমবার সকাল আটটার দিকে তাহের ঘরের বাইরে গেলে এসে দেখেন ঘরের দরজা দেয়া। পরে তার ভাবি ডাকাডাকি করলে তারা দেখতে পান বিছানার পাশেই ঘরের ধরণার সাথে ফাঁস দিয়েছে সাদিয়া।
এদিকে,সরেজমিনে ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহে গেলে প্রতিবেশীরা জানান,সাদিয়া ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে পড়াশোনা বন্ধ রেখেছে। তবে তার বয়স ১৯ বললেও ১৩ বয়সের বেশী হবেনা। সাদিয়া শুধু বিয়ে দেয়ার জন্য তার বয়স ১৯ দেখিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে ৩০ হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে মেঘডুমুর এলাকার নিকাহ রেজিস্টার (কাজী) মফিজ উদ্দিন মফিজ ২৩ জানুয়ারি রাতে এ বিয়ে রেজিস্ট্রী সম্পন্ন করেন। বর আবু তাহেরের প্রথম স্ত্রী সেও নাকি বিয়ের পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল আবার কেউ বলছেন স্বামী আবু তাহের স্ত্রীকে হত্যা করে রশিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়। এছাড়া তাহেরের বয়স ৩১ এবং সাদিয়ার বয়স ১৩ এ বিষয়টাও অনেককে ভাবিয়ে তোলে।
স্থানীয়রা আরো জানান,স্বামী ঘরে ঘুমে থাকা অবস্থায় সাদিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে জানালেও রহস্য আছে বলে মনে করেন সচেতন অভিজ্ঞ মহল।
পরে সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন,
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা হয়েছে এবং স্বামী আবু তাহেরকে থানায় নেয়া হয়েছে।
সাদিয়ার লাশ রাতেই বাড়ি এনে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়। লাশ বাড়িতে এলে বাড়ির লোকজন সহ প্রতিবেশীদের মাঝে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।