বাগেরহাটের চিতলমারীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক নারী ও শিশুদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী হিজলা কাজীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা হামলার শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।এ ঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।এ ঘটনায় নাসরুল্লাহ শেখ বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
হাসপাতাল ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,মঙ্গলবার বিকালে হিজলা কাজীপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ কাজীর উঠানে শিশুরা লাটিম খেলছিল।লাটিম খেলাকে কেন্দ্র করে শিুশুদের মধ্যে মারামারি হয়।শিশুদের থেকে ওই মারামারি মহিলা ও বড়দের মাঝে ছড়িয়ে পরে।এ সময় মারপিটে নাসরুল্লাহ শেখের ছেলে রহমতউল্লাহ (১০),নাসরুল্লাহের স্ত্রী সালমা বেগম (৩৫)ও আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহীম(১০) আহত হয়।এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় সালমা বেগমকে এদিন রাতে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে হিজলা ইউনিয়ন পরিষদ ১ নং ওয়ার্ড সদস্য কাজী ডালিম ও নাসরুল্লাহ শেখ জানান, শিশুরা শান্তিপূর্ণভাবেই লাটিম খেলছিল।আব্দুর রহমানের ভাই আব্দুর রশীদের ঘুমে বিঘœ ঘটায় সে শিশুদের ধাওয়া দিয়ে রহমত উল্লাহকে মারধর করতে থাকে।পরে রহমত উল্লাহর মা তার ছেলে উদ্ধার করতে আসলে রশিদ কাজী তাকে বেদম মারপিট করে আহত করে।
তবে আব্দুর রশীদ কাজী মারপিটের কথা অস্বীকার করে জানান,প্রথমে শিশুদের মারপিটে আমার ভাতিজা আব্দুর রহীম আহত হয়।পরে বিষয়টি মহিলা-মহিলারা মারপিট জড়িয়ে পড়ে।আমি ঠেকাতে গেলে সালমা বেগম মাটিতে পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হয়।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক জানান,এ বিষয়ে হিজলা গ্রামের নাসরুল্লাহ শেখ বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অপরদিকে, বাগেরহাটের চিতলমারীর সন্তোষপুরে জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে হামলায় গীতা হালদার (৫০) ও কল্যাণী হালদার (৬০) নামের দুই নারী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।আহত গীতা ওই গ্রামের গৌরঙ্গ হালদারের স্ত্রী ও কল্যাণী হালদার একই গ্রামের রনজিৎ হালদারে স্ত্রী।হামলার শিকার দুই নারীকে উদ্ধার করে স্থানীয়া চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।এই ঘটনায় গীতা হালদারের স্বামী গৌরঙ্গ হালদার বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের গৌরঙ্গ হালদারের সাথে প্রতিবেশী রনজিৎ হালদারের দীর্ঘদিন ধরে একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।ওই বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার সকালে মৃত নকুল চন্দ্র হালদারের ছেলে রনজিৎ হালদার ও স্বপন হালদারসহ ৬-৭ লোক গৌরঙ্গ হালদারের বাড়িতে যেয়ে অকথ্য ভাষায় গালা-গালি করতে থাকে।এ সময় গৌরঙ্গ হালদারের স্ত্রী গীতা হালদার প্রতিবাদ করতে এলে তার ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে যায়।স্থানীয়রা গীতা হালদারকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
হামলার ঘটনা অস্বীকার করে কল্যাণী হালদার জানান,তার শশুরের নিলাম ক্রয়কৃত জমিতে কাজ করতে গেলে গৌরঙ্গ হালদারের লোকজন তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক জানান,সন্তোষপুরে বিরোধপূর্ণ একটি জায়গা-জমি নিয়ে হামলার ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।তদন্ত সাপেক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।