পটুয়াখালীর গলাচিপায় যুগ যুগ ধরে ঝুপড়ি ঘরে কন্যা ও নাতি-নাতনীদের নিয়ে অতি কষ্টে বসবাস করে আসছেন নুর জাহান বেগম। সরকারের দেয়া একটি ঘর পেতে চেয়ারম্যান-মেম্বরসহ অনেকের কাছে ধর্না দিয়েছেন ৭২ বছরের এই বৃদ্ধা। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। তাই সেই ঝুপড়ি ঘরেই ঠাঁই এই অসহায় পরিবারের। উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের নলুয়াবাগী গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের কাশেম চৌকিদারের স্ত্রী নুর জাহান বেগম।
স্বামী ও ছেলে কেউই তার খোজ না রাখায় অতি কষ্টে যাচ্ছে তার জীবন। তার চারজন কন্যা সন্তান রয়েছে। দিনমজুর মেয়ে পারুলও অসুস্থ। তাই বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ বয়সে অন্যের ঘরে কাজ করতে হচ্ছে নুর জাহান বেগমকে। বসত ঘরের জমিটুকু ছাড়া অন্য কোনো আয়ের উৎস নেই তাদের। তাই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটে পরিবারটির। এলাকার লোকজনের আর্থিক সহায়তায় তিন বছর আগে কম দামে কয়েকখানা টিন কিনে বাঁশ-খুঁটির উপরে চাপা দিয়ে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করেন। সামান্য বর্ষা হলেই টিনের ছিদ্র দিয়ে ঘরে পানি পরে। ভাঙ্গা বেড়া দিয়ে শীতের ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করে ঘরে। ফলে শীত-বৃষ্টি, অর্ধাহারে-অনাহারে কষ্ট করে দিন কাটাতে হচ্ছে পরিবারটিকে। নুর জাহান বেগম বলেন, খাবারের অভাব খাকলেও আমি কারো কাছে খাবার চাই না। নাতি-নাতনী ও অসুস্থ মেয়ে নিয়ে বসবাসের জন্য একটি ঘরের দাবি তার। তিনি আরও বলেন, শীতের ঠা-া বাতাস হু হু করে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়। শুনছি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর অনেকেই পাচ্ছেন, কিন্তু মনে হয় সেই ঘর আমার ভাগ্যে নাই।
আজকে ইউএনও স্যারের কাছে ঘর পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছি। গোলখালী ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা, সাংবাদিক মো. নাসির উদ্দিন প্যাদা বলেন, অসহায় নুর জাহান বেগমের ভাগ্য ফিরে যেতে পারে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বরাদ্দকৃত ঘরের একটি ঘর পেলে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. মঞ্জু ঢালী বলেন, আমি একাধিকবার তালিকায় নাম দিয়েছি। কিন্তু অজানা কারণে কর্তৃপক্ষ নুর জাহান বেগমকে ঘর দিচ্ছে না। সরকার ঘর না দিলে আমি কি করতে পারি। ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, আসলেই নুর জাহান বেগম স্বামী পরিত্যাক্তা একটি নারী জীবন যুদ্ধ করে বেঁচে আছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেলে পরিবারটি সুখী হবে বলে আমার বিশ^াস।
গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ত্যাগী নেতা, ওয়ান-এলিভেনের সময় রাজপথ কাপানো মুজিব আদর্শের সৈনিক মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, আসলেই আমার জন্মস্থান নলুয়াবাগীতে তার বাড়ি। নুর জাহান বেগম জীবন সংগ্রাম করে কন্যা ও নাতিদের নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশীষ কুমার জানান, খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। গৃহহীন, অসহায় ও হতদরিদ্র সবাইকে পর্যায়ক্রমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ঘর দেয়া হবে।