নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়ায় তাপ প্রবাহে বোর ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ মাঠ পরিদর্শন করেন কৃষিবৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। কেন্দুয়া উপজেলায় আকস্মিক ঝড়ো বাতাস ও তাপ প্রবাহের কারণে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই-ব্রি) একদল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। ওই দলের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি মাঠে এ পরিদর্শন কার্যক্রম চালান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মওসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জাতের ধানের শীষ ‘ফুল ও দুধ’ অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় রবিবার রাতে আকস্মিক ঝড়ো বাতাস ও তাপ প্রবাহ বয়ে যায়। এতে উপজেলার বিভিন্ন হাওড়সহ ইউনিয়ন পর্যায়ে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই-ব্রি) একদল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকার বোরো ফসলের মাঠ পরিদর্শন করেন।
গাজীপুরস্থ ওই গবেষণা ইউনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজমুল বারী, উদ্ভিদ শরীরতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সাজ্জাদুর রহমান ও রোগতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশিক ইকবাল খানসহ পরিদর্শক দলটি উপজেলার ব্রাহ্মণজাত, টেঙ্গুরী ও গোগ হাওরসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান।
এ সময় পরিদর্শন দলের সদ্যরা আশাতীত ফলনের অপেক্ষায় থাকা বিস্তীর্ণ মাঠের ফসলের করুণ দশা প্রত্যক্ষ করেন। সেই সঙ্গে আকস্মিক তাপ প্রবাহে ফুল ও দুধ অবস্থায় থাকা এসব ধান ‘হিট শক এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন। তাছাড়া যেসব ধানের এখনো শীষ বের হয়নি অর্থাৎ ‘বুটিং ও হেডিং’ স্টেজে রয়েছে সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন। এ অবস্থায় ওইসব ধান ক্ষেতে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ধরে রাখা এবং ‘ম্যাজিক স্প্রে’ (১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম এমওপি সার, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম চিলেটেড জিংক) প্রয়োগের পরাদর্শ দেন। এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ধানগাছগুলো কিছুটা শক কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সময় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের দলকে পরিদর্শন ও মাঠ পর্যবেক্ষণে সহায়তা করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম শাহজাহান কবির, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তারিক আজিজ ও উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান প্রমুখ। পরে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের দলটি একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ফসলের মাঠ দেখার জন্য উপজেলা মদন ও খালিয়াজুড়িতে যান।
এদিকে আগের দিন সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মইনউদ্দিন,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পপিরচালক তানভীর হাসান ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবির ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তারিক আজিজসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।