ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলে ভাই-বোনের বিবাদ মেটাতে সালিসকারীদের যত-কান্ড। পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল ভাই-বোনের মধ্যে। সেই ঝগড়ার জের ধরে বোনের বসতঘরের টিনের বেড়া কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেন ভাই। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক সালিসে সালিসকারীরা ভাইকে নগদ দেড় লাখ টাকা ও পাঁচ হাজার ইট জরিমানা করেছেন। এ জরিমানা পরিশোধ করতে হবে আগামী বৃহস্পতিবার এর মধ্যে। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুণাকান্দা গ্রামে।
জরিমানার শিকার ভাইয়ের নাম মো. হাদিস মিয়া (৫৯)। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের পুত্র। গত দশ বছরে ধরে তিনি দুবাই থাকেন। বাড়িঘর মেরামত করা ও বোরো মৌসুমের ফসল ঘরে তোলার জন্য ছয় মাসের ছুটি নিয়ে গত জানুয়ারি মাসে দেশে ফেরেন তিনি। তার দুই ছেলেও বিদেশে থাকেন।
খবর পেয়ে বিকেলে বরুণাকান্দা গ্রামে গেলে হাদিস মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বাড়ির পাশের কোরবানীর মাঠ নামে একটি উন্মুক্ত স্থানের ঘাস তুলে সেখানে ধান শোকানোর উপযোগী করেন তার স্ত্রী মদিনা খাতুন। এ নিয়ে তার ছোট বোন মোছা. অনুফা খাতুন স্ত্রীর সাথে বচসা শুরু করেন। পরে তাদের দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, ধাক্কধাক্কি ও মারামারিও হয়। পরে অনুফা ফোন করে তার শ্বশুরবাড়ির এলাকা থেকে কিছু লোক ডেকে আনেন। আমাকে অভিযুক্ত করে বোনের ডেকে আনা লোকজনই বসতঘরের বেড়া কুপিয়ে তছনছ করেন।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমাকে হেনস্তা করতে সালিসের আয়োজন করা হয়। সালিসকারীরা আমাকেও থাকতে নির্দেশ দেন। তার বাড়ির সামনে সালিস বসানো হয়। ওই সালিসে আমার বিরুদ্ধে অনুফার বাড়িঘর ভাঙচুর ও তার বিছানার তোষকের নিচে রাখা এক লাখ ৪৭ হাজার টাকা খোয়া যাওয়ার দায় তার হাদিস মিয়া ওপর চাপানো হয়। বাড়ি ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ হাজার ইট ও বিছানার নিচ থেকে খোয়া যাওয়া এক লাখ ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা হিসেবে হাদিস মিয়া তার বোন অনুফাকে প্রদানের সিদ্ধান্ত দেন সালিসকারীরা। জরিমানা ধরার পর কিছু বলতে চাইলে সেই সুযোগও আমাকে দেওয়া হয়নি।
ওই সালিসে উপস্থিত ছিলেন এলাকার মো. মন্টু খান। তিনি সালিসের জরিমানার কথা স্বীকার করে বলেন, টাকা জরিমানা না। খোয়া যাওয়া টাকাটা হাদিস ফেরত দিবে। তাছাড়া ভাই তো বোনকে এমনিইতেই দিতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত টিনের বদলে টিন জরিমানা না ধরে ইট কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশ থাকে ভাই অনেক টাকা আছে। তাই টিনের বদলে ইট দিতেই পারে।