বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে ঝালকাঠির কাঠালিয়ার বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে (২৫ মে) উপজলা পরিষদ ও কাঠালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার বিষখালী তীরের বাঁধের একটা অংশ ভেঙ্গে পানি ঢুকে বাড়ির আঙ্গিনাসহ তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ।
এতে আতংকে রয়েছেন বাঁধ ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে কাঠালিয়া সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বড় কাঠালিয়া, পূর্ব কচুয়া, লতাবুনিয়া, রঘুয়ার দড়ির চর, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আমুয়াসহ বিষখালী নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের ১৫টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বিষখালী নদী পাড়ের (বাঁধ ভাঙ্গন) বাসিন্দা আঃ রব খান জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ আসলে আমারা খুবই আতংক থাকি। বিশেষ করে রাতে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকি। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নদীতে চলে যায়। আজ দুপুরে হঠাৎ করে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যেভাবে পানি উঠতেছে এতে খুবই বিপদে আছি।
কলেজ শিক্ষার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম লিমন জানায়, বহু বছর ধরে লঞ্চঘাট এলাকা ভেঙ্গে নদী বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর লঞ্চলঘাটের ৩শ মিটার এলাকায় বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের উত্তর সাইডে কিছুই ফেলানো হয়নি। পানি স্রোতের চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙ্গছে। আজ বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি আরো বাড়বে। আমারা সবাই আতংকে আছি। তাই দ্রুত এ বাঁধটি মেরামত করা জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।
কাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোঃ কিবরিয়া বলেন, ‘এক জোয়ারেই পানি অনেক বাড়ছে। এহোন বেড়ি ভাইঙ্গা ওই সাইড দিয়্যা ছুইট্রা গেছে। এতে আমাদের কৃষির অনেক খোতি হয়েছে। গাছের মরিচ ও ডাইল তুইল্লা নেওয়া যাইবে না। আর রাতে পানি বাড়লে আমাদের বাড়ি-ঘর তো পুরাই ডুইব্বা যাইবে’।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান জানান, সকাল থেকে আমি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছে। কোথাও কোন সমস্যা নেই। তবে উপজেলা পরিষদের পিছনের বিষখালী তীরের বাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গেছে। কিন্তু তেমন কোন ক্ষতির আশংকা নেই। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় উপজেলায় একটি কন্ট্রোল রুম, ৬টি মেডিক্যাল টিমসহ প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ৬৩টি কমিটির সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা পরিষদে জরুরী সভা আহবান করা হয়েছে। উপজেলার ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে ১৮ হাজার ৮শত ৭৫জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে।