অবশেষে তালার জেঠুয়ায় গৃহবধূ রুপালী বেগম (৩৫) কে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে।
মামলায় রাুপালীর স্বামী অভিযোগ করেছেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণে ব্যার্থ হয়ে তাকে হত্যা শেষে বাড়ির পাশের আম গাছে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে মূল ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিষয়টিকে আতœহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি ঘটনার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে থানায় এজাহার না করে অপমৃত্যু মামলা করা হয় বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২১ মে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জেঠুয়া এলাকার বাড়ির পাশের একটি আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থানীয় মনিরুজ্জামান সরদারের স্ত্রী রুপালী বেগম (৩৫) এর লাশ উদ্ধার হয়।
ঐসময় পরকীয়ার জেরে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে এলাকায় গুঞ্জন থাকলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি থানা পুলিশ। লাশের সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য পুলিশ তার মরদেহ মর্গে পাঠায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, রুপালীর ঘাড়ে ছেলা যখম,দু’হাতের বাহুতে কালো দাগযুক্ত জখম,পরিহিত বøাউজের মাঝ বরাবর ছেঁড়া ও খোলা ছিল। এছাড়া ঝুলন্ত এলাকার নীচে মাটিতে একাধিক মানুষের খালি পায়ের ছাপ ছিল। এছাড়া মৃতার যৌনাঙ্গে বীর্য,মলদ্বারে মলসহ আতœহত্যার চিহ্ন না থাকায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ থাকায় তার স্বামীর ধারণা, তাকে ৪/৫ জনের সহায়তায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা শেষে ঘটনাটিকে আতœহত্যা বলে চালিয়ে দিতে বাড়ির পাশে আমগাছে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়।
মামলায় রুপালীর স্বামী মনিরুজ্জামান সরদার আরো উল্লেখ করেন যে, একই এলাকার জামাল ফকিরের ছেলে মো: সেকেন্দার (৪০) এর কারণে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখময় ছিলনা। এমনকি তিনি নিরক্ষর ও সহজ-সরল প্রকৃতির হওয়ায় রুপালী তাকে মুল্যায়ন করতনা। এসব ঘটনায় তারা স্বামী-স্ত্রী পরষ্পর আলাদা ঘরে রাত্রি যাপন করতেন। এমন অবস্থায় প্রায়ই রাতে মনিরুজ্জামান রুপালীর ঘর থেকে সেকেন্দারসহ বিভিন্ন মানুষের গলার শব্দ শুনতে পেত। এমনকি ঘটনার রাতসহ কয়েক দিন যাবৎ তিনি সেকেন্দারসহ ৪/৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে তার বাড়ির আশ-পাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। ঘটনার রাতে আনুমানিক ২ টার দিকে মনিরুজ্জামানের ভাই আসাদুজ্জামান সরদার (৪৬) তার মাছের ঘের পাহারা দিয়ে বাড়ি ফিরে বাগানে আম কুড়াতে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজন লোককে পালিয়ে যেতে দেখে এরপর সেখানে আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় রুপালীর লাশ দেখে চিৎকার দেয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তার লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশের সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয় যে, ঘটনার দিন সেকেন্দার তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে রুপালীর ফোনে অনৈতিক কাজের জন্য চাপ প্রয়োগ করে অন্যথায় তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে। ঐদিন তারা রুপালীর স্বামীকেও হুমকি প্রদান করে। ধারণা করা হচ্ছে, সেকেন্দারের সাথে রুপালীর অবৈধ সম্পর্ক থাকার জেরে ঘটনার রাতে সেকেন্দারসহ আরো ৪/৫ জন তাকে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকে হত্যা শেষে লাশ ঝুলিয়ে দেয়।
এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে থানা পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় গত ৩১ মে রুপালীর স্বামী মনিরুজ্জামান সরদার বাদী হয়ে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আমলী আদালত (৩) এ ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড’ এ একটি মামলা করেন। যার নং-সি আর-৮৭/২০২১।