হয়তো শুনতে অবাক লাগছে যে হাসপাতালের কেবিনে বিয়ে, সেখানেই বাসর! সেটা কিভাবে সম্ভব। আসলে মুল ঘটনাটি হলো সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হুসাইন আহমেদকে (২৩)।
দুর্ঘটনার খবরে তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান প্রেমিকা তাসফিয়া সুলতানা মেঘা (১৯)। পরে দুইজনের সম্মতিতে গভীর রাতে কাজী ডেকে হাসপাতালেই বিয়ে দেয় হুসাইন আহমেদের বাবা ও স্বজনরা। বিয়ের পর হাসপাতালের কেবিনেই তারা রাত্রিযাপন করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বেসরকারি একটি হাসপাতালে। অনার্স পড়ুয়া ছেলে হুসাইন আহমেদ আলমডাঙ্গা উপজেলার চরপাড়া গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে। তাসফিয়া সুলতানা মেঘার বাড়ি ঝিনাইদহের লেবুতলা গ্রামে। তাদের বিয়ের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের রোগীরা নব দম্পতিকে দেখার জন্য ভিড় জমায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় হুসাইন আহমেদের ডান পা ভেঙে যায়। ভাঙা পা নিয়ে তিনি গত কয়েক দিন ধরে উপজেলার ফাতেমা ক্লিনিকের চার নম্বর কেবিনে ভর্তি হন। তার দেখাশোনার জন্য সেখানে তার মা-বাবা ও বোন ছিলেন। হুসাইন আহমেদের পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবরে বৃহস্পতিবার সেখানে ছুটে যান প্রেমিকা তাসফিয়া সুলতানা মেঘা।
সব কিছু জানার পর হুসাইন আহমেদের স্বজনরা মেঘার বাবার সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনা শুনে মেঘার বাবা মেয়েকে বাড়িতে নিতে অস্বীকার করেন। সম্ভব হলে বিয়ে দিয়ে দেবার পরামর্শ দেন তিনি। বিয়েতে রাজি হন মেঘাও। পরে গভীর রাতে হাসপাতালের কেবিনেই কাজি ডেকে তাদের বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর সেখানেই তারা রাত্রিযাপন করেন।
হুসাইন আহমেদের বাবা আব্দুস সোবহান বলেন, ‘মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে আমাদের পূর্ব থেকেই পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। ছেলের অসুস্থতার কথা শুনে মেয়ে হাসপাতালে চলে এসেছে। এরপর আমি মেয়ের বাবার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলি। মেয়ের বাবা এভাবে বিয়ে দিতে রাজি হননি। কিন্তু মেয়েটি বিয়ে না করে এখান থেকে যাবে না- এরকম জেদ করলে মধ্যরাতে কাজি ডেকে বিয়ে দেওয়া হয়।
ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক মুনজুর আলী বলেন, ‘ছেলের বাবা আব্দুস সোবহান আমার বাল্য বন্ধু। বন্ধুর ইচ্ছাতে তার ছেলের বিয়ে আমার ক্লিনিকে হয়েছে। ক্লিনিকে এরকম একটা বিয়ে হয়েছে এ জন্য আমারও ভালো লাগছে।