সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেঠুয়া এলাকায় আলোচিত গৃহবধূ রুপালী বেগম (৪০)ঝুলান্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আদালতে পরষ্পর দু’টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। যার একটির বাদী নিহত রুপালী বেগমের স্বামী মনিরুজ্জামান সরদার। তিনি সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আমলী আদালত (৩) এ ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড’ এ মামলাটি করেন। যার নং-সি আর-৮৭/২০২১ তালা।ঐমামলায় প্রতিবেশী জনৈক সেকেন্দার (৪০) কে দায়ী করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ৪/৫ জনকে আসামী করা হয়।মামলায় স্ত্রীর পরকিয়া ও বেপরোয়া জীবন-যাপনের জেরে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা শেষে বাড়ীর পাশে আম গাছে লাশ ঝুলিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অপর মামলাটি যৌতুকের বলি হিসেবে আখ্যা দিয়ে নিহতের চাচা উপজেলার আমড়াডাঙ্গা গ্রামের মাজেদ মোড়ল বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ১১ (ক)/৩০ ধারায় একটি মামলাটি করেছেন ।যার নং ২৬২/২১। মামলায় নিহতের স্বামী মনিরুজ্জামান ও তার তিন ভাইসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মামলাটির তদন্ত ৭ কার্য দিবসের মধ্যে সম্পান্ন করার জন্য সাতক্ষীরা পিবিআিইকে প্রেরণ করেছেন।
মনিরুজ্জামান সরদার তার স্ত্রীকে হত্যার জন্য প্রতিবেশী জামাল ফকিরের ছেলে সেকেন্দার (৪০) কে দায়ী ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে তার মদদদাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন । এছাড়া মামলায় তিনি নিজেকে নিরক্ষর হিসেবে দাবি করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শ, আসামীর ইন্ধন ও পুলিশের বলা মতে সাদা কাগজে টিপ স্বাক্ষর নিয়ে পরে অপমৃত্য সংক্রান্ত ডায়েরী হিসেবে লিপিবদ্ধ করে থানায় জমা দেয়া হয়। যার নং-১০/২১। যা তার বক্তব্য নয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই ঘটনায় অপর মামলায় রুপালীর চাচা ঘটনাটিকে যৌতুকের বলি হিসাবে দাবি করে প্রথম মামলার বাদী মনিরুজ্জামান ও স্বাক্ষীদের মধ্যে বাদীর তিন ভাইয়ের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত পরিচয় ৪/৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। এমামলায়ও থানা পুলিশের কথা বলা হয়েছে যে, যেহেতু একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে তাই মামলা নেয়নি পুলিশ।
নিহতের স্বামীর অভিযোগ, মুল আসামীকে বাঁচাতে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেয়ারম্যানের ইন্ধনে রুপালীর চাচা মাজেদকে দিয়ে মামলাটি করা হয়েছে। তিনি ও তার পরিবার ঘটনার তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহতের মেয়ে রিমা বেগম (২৪) এপ্রতিবেদককে জানান, তার চাচাতো নানা ও মামারা ঘটনার মূল আসামীদের আঁড়াল করতে মোটিভ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তার পিতা ও কাকাদের নামে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করেছেন। তিনি এপ্রতিনিধিকে বলেন, তার পিতা নিরাক্ষর ও অত্যান্ত সহজ সরল প্রকৃতির লোক। ছোট বেলা থেকে তিনি কখনো মায়ের সাথে পিতার অসদাচারণ করতে দেখেননি, বরং পিতাই ছিলেন মাযের অধিনস্থ । মায়ের হত্যার ঘটনায় প্রকৃত জড়িতদের চিহ্নিতপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২১ মে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জেঠুয়া এলাকার বাড়ির পাশের আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থানীয় মনিরুজ্জামান সরদারের স্ত্রী রুপালী বেগম (৩৫) এর লাশ উদ্ধার হয়। ঐসময় পরকীয়ার জের ধরে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে এলাকায় গুঞ্জন থাকলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি থানার পুলিশ।