ঝালকাঠি সদর উপজেলার দেউরী সাইক্লোন সেল্টার কাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণী কক্ষ ও একটি মসজিদটি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের সে দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গিয়ে ছাদ ভেঙে পড়ে এক শিক্ষার্থী নদীতে নিখোঁজের । এক দিনেও খোঁজ মেলেনি সেই নেয়ামত উল্লাহ।
বরিশাল নৌ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাস্থলটি তিন নদীর মোহনা হওয়াতে এখানে প্রচণ্ড স্রোত। উদ্ধার অভিযানে আমাদের ডুবুরিদের বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে। তবে নিখোঁজ কিশোরের অবস্থান এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।’
ঝালকাঠিতে সাইক্লোন শেল্টার ভেঙে পড়ার দৃশ্য ভিডিও করার সময় ভবনের নিচে চাপা পড়ে বিষখালী নদীতে নিখোঁজ কিশোরের খোঁজ মেলেনি এখনও।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও নির্ণয় করা যায়নি কোথায় আছে কিশোরের দেহ।
বরিশাল নৌ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভাষ্য, যে স্থানে কিশোর নেয়ামত ডুবে গেছে সে স্থানটি তিন নদীর মোহনা। তাই তাদের উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে।
নলছিটি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, ‘নিখোঁজ নেয়ামত যদি ভাঙা ভবনের ছাদের নিচে চাপা পড়ে থাকে তাহলে পানির নিচ থেকে ছাদের অংশ সরানো না গেলে নেয়ামতের দেহ বের করা সম্ভব হবে না। গত ২৪ ঘণ্টায় পলি পরে দ্রুত ঢেকে যাচ্ছে ভাঙা ভবনের অংশ।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘যেখানে ভবনটি ডুবেছে সেই জায়গাটিতে পানির নাব্যতা প্রায় ৬০ ফুট। পানির নিচে ভাঙা ভবনের দুটি ছাদ এক হয়ে আছে। কংক্রিট আর রডের জন্য আমরা কাজ করতে পারছি না।’
বিষখালী নদীর ভাঙনে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নদীগর্ভে তলিয়ে যায় ঝালকাঠি সদরের পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ও একটি আধাপাকা মসজিদ।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়টির পশ্চিম অংশে থাকা সেফটি ট্যাংকি নদীতে তলিয়ে যায়। তার পরেই শিক্ষকরা বিদ্যালয় ভবনের দোতলায় থাকা মালামাল সরিয়ে নিচ্ছিলেন।
তখন ভবনের নিচতলায় ভাঙনের দৃশ্য ভিডিও করছিল অনেকেই। ভবনটি যখন দেবে যায় তখন সবাই দৌড়ে নিরাপদে সরে যেতে পারলেও ছাদের নিচে চাপা পড়ে নদীতে তলিয়ে যায় নেয়ামত।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেবলেন, এতে বিদ্যালয়টির প্রায় তিন শত শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অন্যদিকে,ঝড়-বন্যায় পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের আশ্রয়ের কোন স্থান থাকবেনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী শাসনের কথা বললেও বাস্তবে তা করা হয়নি।
ঘটনার পরপরই ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন্নাহারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।