সাতক্ষীরার তালা উপজেলার একটি গ্রামের নাম তেঁতুলিয়া। প্রখ্যাত সাহিত্যিক ,সাংবাদিক , কবি সৈয়দ সিকান্দার আলী জাফরের পৈতিক নিবাস এই তেঁতুলিায়ায়। এই গ্রামেই রয়েছে প্রগৈতিহাসিক মুসলিম স্থাপত্যেশৈলীর অনন্য নিদর্শন তেঁতুলিয়া মিয়ার মসজিদ। মসজিদটির আসল নাম খান বাহাদুর কাজী সালামতউল্লাহ জামে মসজিদ হলেও ঐতিহাসিক ভাবে মিয়ার মসজিদ নামেই বেশী পরিচিত।তবে বর্তমানে এর নাম তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ করা হয়েছে।
মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মৌলভী কাজী সালামতউল্লাহ খান বাহাদুর তেঁতুলিয়ার জমিদার ছিলেন। ১৮০০ শতকের দিকে জমিদার কাজী সালামতউল্লাহ মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে জনশ্রæতি থাকলেও নির্দিষ্ট সাল নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন এই মসজিদটি খুলনা-পাইকগাছা কবি সিকান্দার আবু জাফর সড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত । মসজিদটির পাশে রয়েছে একটি সুগভীর পুকুর। পুকুরের তলদেশ থেকে সিঁড়ি উঠে গেছে মসজিদ চত্বরে।
মসজিদটিতে ৯ ফুট উচ্চতা এবং ৪ ফুট প্রস্থ ৭টি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার ওপর রয়েছে বিভিন্ন রঙের কাচের ঘুলঘুলি। চুনসুরকি ও চিটাগুড়ের গাঁথুনিতে নির্মিত মসজিদটিতে ১৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ৬টি বড় গম্বুজ ৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ১৪টি মিনার রয়েছে এবং চার কোণে রয়েছে ২৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ৪টি মিনার।মসজিদের ভিতরে ৫টি সারিতে ৩২৫ জন ও মসজিদের বাইরের চত্বরে ১৭৫ জন মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে এই মসজিদটি সমতল ভুমি থেকে এতটা উচু ছিল যে,মসজিদের তলাদিয়ে ধান বোঝাই গরুর গাড়ী চলাচল করতে পারতো। বর্তমানে মসজিদটির তলদেশ সমতল ভুমির সাথে মিশে গেছে। প্রায় দুই শত বছরের পুরনো ঐতিহাসিক এই মসজিদটি বর্তমানে তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ নামেই পরিচিত। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে ব্রিটিশ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট জমিদার কাজী সালামতউল্লাহ আগ্রারার তাজমহলের অপরূপ নির্মাণশৈলীকে সামনে রেখে তেঁতুলিয়ায় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রতœতত্ত¡ অধিদফতর ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন হিসেবে মসজিদটি তাদের আয়ত্তে নিয়েছেন।