করোনা মহামারিতে দেড় বছরেরও অধিক সময় বন্ধ থাকার পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) খুলেছে দেশের সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে বিদ্যালয়ে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। তবে পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাজছে বিষাদের সুর।
করোনায় এ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (দিবা শাখা) তাপসী রানী ও আয়া শাহের বানুকে হারিয়ে শোকাহত সবাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় মাস খানেক করোনায় আক্রান্ত হন তাপসী রানী। তার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিলে ঢাকার সিনিয়র সিটিজেন হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ৬ আগস্ট ঢাকার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়। এর আগে জুনে মারা যান আয়া শাহের বানু।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারিহা ইসলাম এবং জারিন তাসনিম নুক্তি বলেন, প্রিয় শিক্ষিকা ও আয়ার মৃত্যুতে তারা এখনো শোকাহত। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সাইদুর রহমান বাবু জানান, শিক্ষক তাপসী রানীর গুণে তিনি মুগ্ধ ছিলেন। তার কথা মনে পড়লে তিনি কষ্ট অনুভব করেন। তার এক সহকর্মী শাহের বানুর মৃত্যুতেও তিনি শোকাহত।বিদ্যালয়ে কর্মরত আরেকজন আয়া হালিমা খাতুন জানান, তারই দীর্ঘদিনের সহকর্মী শাহের বানুর মৃত্যুতে তিনি খুব কষ্ট পেয়েছেন। শিক্ষিকা তাপসী রানীর খুব প্রশংসা করে তিনি জানান, তার ব্যবহার ছিল অতুলনীয় প্রশংসনীয়। তার কথা মনে পড়লেই খারাপ লাগে। তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। মলিন মুখে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (প্রভাতী শাখা) হরিশ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, যেহেতু আমি একটি শাখার ইনচার্জ আবার তাপসী রানী আরেকটি শাখার ইনচার্জ ছিলেন, সেহেতু বিদ্যালয়ের অনেক কিছুতে তার সঙ্গে সমন্বয় করতে হত। পেশাগত কাজে তার সঙ্গে আমার বেশি সময় কেটেছে। তার মৃত্যু আমাকে কাঁদিয়েছে। তার বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা মূলক কথাগুলো এখনো কানে বাজছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জাব্বার বলেন, তাপসী রানী ও শাহের বানুর মৃত্যুতে সবাই শোকাহত। বিদ্যালয় খুলেছে, সবাই এসেছে শুধু তারা আজ নেই। তাদের জন্য আমার সবসময় আশীর্বাদ থাকবে।
স্কুল খোলার ব্যপারে প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের কক্ষে বসানো হচ্ছে। মাস্ক পরেই স্কুলে প্রবেশ করছে শিক্ষার্থীরা। তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রয়েছে। চলতি বছর এবং সামনের বছর যারা এস.এস.সি পরীক্ষা দেবে তাদের প্রতিদিনই ক্লাস নেওয়া হবে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসও চলবে প্রতিদিন। তবে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ক্লাস চলবে সপ্তাহে একদিন করে।