ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সিএনজি ছিনতাই এর জন্য এক সিএনজি চালককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতের নাম মোজাম্মেল হোসেন (২১)। তিনি পেশায় একজন সিএনজি চালক। তার বাড়ি জেলার নান্দাইল উপজেলার সাভার গ্রামে। ওই গ্রামের ফরিদ মিয়ার ৮ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় মোজাম্মেল। নিহতের দুই মাস বয়সী একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
মোজাম্মেলের বড় ভাই শিপন মিয়া বলেন,দেড় বছর ধরে একই গ্রামের রাজিব মিয়ার সিএনজি ভাড়ায় চালাতো মোজাম্মেল। নান্দাইল থেকে ময়মনসিংহ সড়কে সিএনজি চালাতো সে। সোমবার সকালে মোজাম্মেল সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি নিয়ে বের হয়। এরপর সারাদিনে আর বাড়ি ফেরেনি।
শিপন আরও জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তার বাবার কাছে ফোন করে মোজাম্মেল। ওই সময় ভয়ার্ত কণ্ঠে মোজাম্মেল বাবাকে বলে তাড়াতাড়ি ২০ হাজার টাকা পাঠাও,নইলে ওরা আমাকে
মেরে ফেলবে। কিন্তু টাকা কী ভাবে পাঠাবে,কোথায় পাঠাবে তা কিছুই বলতে পারেনি। এর পর তারা অনেক চেষ্টা করেও ওই নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করতে পারেন নি।
শিপন জানান,মঙ্গলবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের মৃগালী মোড়ে আঠারবাড়ি-ঈশ্বরগঞ্জ সড়কের কাছ থেকে গলায় মাফলার প্যাঁচানো ও মুখ থেঁতলানো লাশ দেখে স্থানীয়রা রায়বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে খবর দেয় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়, পরে নিহতের পরিবারের লোকজন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় গিয়ে মোজাম্মেলের মরদেহ শনাক্ত করেন। দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। শিপনের দাবি,তার ভাইকে হত্যা করে সিএনজি নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহতের বাবা ফরিদ মিয়া আহাজারি করে বলেন,ওরা আমার বাপরে বাঁচতে দিল না। ২০ হাজার টাকার জন্য আমার বুকের ধনরে শেষ কইরা দিল। যারা তার ছেলেকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তাদের শনাক্ত করে কঠোর বিচার দাবি করেন তিনি।
সুরতহালের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়,গলায় মাফলার প্যাঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করার কারণেই মোজাম্মেলের মৃত্যু হতে পারে। হত্যার পর পাকা রাস্তা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ায় মুখের আঘাতটি হতে পারে। নিহতের শরীরে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই বলেও জানায় পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা ফরিদ মিয়া বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল কাদের মিয়া বলেন, সিএনজি নিতেই অন্য কোথায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা লাশ ফেলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যকারীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে।