প্রায় দেড় যুগ ধরে বিশ্বকাপের সময় জার্মানির বড় পতাকা বানিয়ে আসছেন মাগুরা সদরের ঘোড়ামারা গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন (৭০)। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) মাগুরা সদরের নিশ্চিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জার্মানির সাড়ে সাত কিলোমিটার পতাকা প্রদর্শন করে মাগুরাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এই পতাকা প্রদর্শন অনুষ্ঠানে যোগ দেন চট্টগ্রামের জার্মানি ফুটবল ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা। এ সময় গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও উপস্থিত ছিলেন
আমজাদ হোসেন জানান, ২০০৬ সালের শুরুর দিকে তিনি প্রিয় ফুটবল দল জার্মানির পতাকা তৈরির উদ্যোগ নেন। এ সময় পরিবারের কারও সমর্থন ছিল না। তারপর নিজের জমি বিক্রি করে বানান জার্মানির পতাকা। তবে এবার তার সন্তানরাই পতাকা তৈরির খরচ দিয়েছেন। নতুন করে দুই কিলোমিটার বাড়িয়ে আগের পতাকার সঙ্গে যুক্ত করে মূল পতাকার দৈর্ঘ্য হয়েছে সাড়ে সাত কিলোমিটার।
গত দুই সপ্তাহ ধরে চারজন দর্জি মিলে পতাকা সেলাই করেছেন। এবার নতুন দুই কিলোমিটার পতাকা তৈরি করতে আমজাদ হোসেনের খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। তার মধ্যে কাপড়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার।
আমজাদ হোসেন বলেন, ‘২০০৫ সালের দিকে আমি কঠিন পীড়ায় আক্রান্ত হই। বিভিন্ন ওষুধ খেয়েও কোনো কাজ হচ্ছিল না। তখন মাগুরা শহরের একজন চিকিৎসকের পরামর্শে জার্মানির তৈরি হোমিও ওষুধ সেবন করে আরোগ্য লাভ করি। এরপর থেকেই আমি জার্মান দলের ভক্ত।’
তিনি বলেন, জার্মান দলের প্রতি রয়েছে আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা। বিশেষ করে বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই জার্মানির দলের প্রতি ভালোবাসার টানে কিছু একটা করতে ভালো লাগে। তাই জার্মানির পতাকা তৈরি করেছি।
চট্টগ্রাম থেকে আসা জার্মানি ফুটবল ফ্যান ক্লাবের সদস্য আকতার হোসেন বলেন, আমার প্রিয় দল জার্মানির ভক্ত আমজাদ ভাইকে স্বাগত জানাতে আমরা চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। আমার মনে হয় বাংলাদেশে এত বড় পতাকা আর নেই।
তিনি বলেন, আমজাদ সাহস নিয়ে এ পতাকা তৈরি করেছেন। আমিও জার্মানি দলকে ভালোবাসি। জার্মানি এবারের বিশ্বকাপে ফেবারিট দল।
মাগুরার ক্রীড়া সংগঠক বারিক আনজাম বার্কি বলেন, আমজাদ ভাই জার্মানি দলের দারুণ ভক্ত। দলের প্রতি ভালোবাসার টানেই তিনি দীর্ঘ সাড়ে সাত কিলোমিটার পতাকা তৈরি করেছেন।
মাগুরার চাউলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, ‘আমজাদ আমার এলাকার ছেলে। সে জার্মান দলের পাগলভক্ত। নিজের জমি বিক্রি করে সে জার্মান দলের পতাকা তৈরি করেছে। যা অনেকেই পক্ষে করা সম্ভব নয়।