ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৫০টি কার্ডের মালামাল তুলে নিলেন ইউপি সদস্য যে কারণে মালামাল না পেয়ে ভোক্তারা বিক্ষোভ করে,টিসিবির পণ্য আসবে এই খবরে ভোর থেকেই যার যার হাতে কার্ড নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন ভোক্তারা।
বিকেলে ট্রাকে করে মালামাল আসে। তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিতে পারলেও ৬০ জন কার্ডধারী মালামাল না পেয়ে খালি হাতে ফিরে গেছেন। পরে অভিযোগ ওঠে,স্থানীয় ইউপি সদস্য ১ শ, ৯৯টি কার্ডের মধ্যে ৫০টি কার্ডের মালামাল একাই উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন।
এ সময় বঞ্চিত ভোক্তারা ডিলার ও ট্রাক আটকে বিক্ষোভ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে এ ঘটনা ঘটে জেলার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চত্বরে। খবর পেয়ে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পণ্য না পেয়ে ক্ষুব্ধ কার্ডধারীরা পণ্য বহনকারী ট্রাকটি ঘেরাও করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
এদের একজন ১১৬৪ নম্বর কার্ডধারী আবদুল জব্বার (৭০) বলেন, সরকার যেমন আমার নামে একটি কার্ড দিয়েছে, ঠিক তেমনি আমার নামে পণ্যও বরাদ্দ দিয়েছে। তাহলে সারা দিন অপেক্ষা করার পর আমি কেন পণ্য ক্রয় করতে পারলাম না। এর জবাব কার কাছে চাইব? যদি সচ্ছল থাকতাম, তাহলে এখানে ভিড়ে দাঁড়িয়ে জীবনটা কয়লা করতাম না।
৯০১ নম্বর কার্ডধারী তৈয়ব আলীর স্ত্রী খোশ নাহার (৬৫) জানান, তার স্বামী অসুস্থ। তিনি স্বামীর কার্ড নিয়ে পণ্য ক্রয় করতে এসেছিলেন। কিন্তু সারা দিন অপেক্ষা করেও পণ্য ক্রয় করতে পারেননি। অথচ এলাকার জাহাঙ্গীর মেম্বার ৫০টি কার্ডের পণ্য একাই নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তথ্য সংগ্রহ করার সময় কার্ডধারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
তারা বলেন, সরকার প্রত্যেক কার্ডের বিপরীতে পণ্য বরাদ্দ দিয়েছে। তাহলে আমাদের পণ্য কে নিয়ে যাচ্ছে। ডিলার যখন পণ্য বিক্রয় করেন, তখন সেখানে কাউকে তদারকি করতে দেখা যায় না। যে যার মতো করে পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কার্ডধারী বলেন, আমরা তো চোখ থাকতেও অন্ধ।
সামনে মেম্বারে বস্তা ভইরা মালামাল নিয়া গেছে। কিছু কওনের সাহস নাই। ইউপি চত্বরে টিসিবি পণ্য বহন করে আসা ট্রাকটি থাকলেও সেখানে ডিলারের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।
তবে ডিলারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়,প্রতিবার কিছু লোক একাধিক কার্ড এনে প্রায় জোর করে পণ্য নিয়ে যান। কার্ডগুলো আসল না নকল তা শনাক্ত করার কেউ নেই। তাই অনেকের হাতে কার্ড থাকলেও বঞ্চিত হচ্ছেন। ৫০ জনের পণ্য সংগ্রহ করার বিষয়টি স্বীকার করে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মানুষের সুবিধার লাইগ্যা আমি এই কাজটি করেছি।
এতে দোষের কী?এদিকে একটি সূত্র জানায়,মেম্বারের উত্তোলন করা মালামালগুলো স্থানীয় বিভিন্ন দোকানে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাসলিমা আক্তার সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, ইউপি চত্বরে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় ২০-২৫ জন কার্ডধারী পণ্য কিনতে পারেননি। তবে পরেরবার থেকে কোন এলাকার মানুষ কোন বিক্রয় কেন্দ্র থেকে পণ্য ক্রয় করবেন তা আগাম বলে দেওয়া হবে।