বিশ্বের সর্ববৃহৎ টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গুগলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগের “অফার লেটার” পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফারহান শাহরিয়ার শুভ। মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে শুভ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গতকাল সোমবার (১২ জুন) রাতে আমি গুগল থেকে কনফার্মেশন লেটারটি পেয়েছি।
ফারহান শাহরিয়ার শুভ নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার মো. আব্দুল হেকিম ও বিলকিস সুলতানা দম্পতির সন্তান। বাবা পূর্বধলা কলেজের হেড অ্যাকাউনটেন্ট এবং মা একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। চার ভাইয়ের মধ্যে শুভ সবার বড়। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গুগলে ডাক পাওয়ার বিষয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে শুভ বলেন, ‘গুগলে চাকরি করা আমার ছোটবেলার স্বপ্ন। ক্লাস টেন থেকেই আমি প্রোগ্রামিং শুরু করি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এ সম্পর্কে আরও বিস্তর জানতে পারি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই গুগলে যেতে হবে, এমন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে আমি প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। আমরা বন্ধুরা মিলে প্রোগ্রামিংয়ে প্র্যাকটিস করতাম। আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। সৃষ্টিকর্তার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
তিনি আরও বলেন, আমার এই সফলতার পিছনে আমার পরিবার, শিক্ষক, সিনিয়র ভাইয়া-আপু এবং বন্ধুদের অবদান রয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এবিষয়ে সিএসই বিভাগের অধ্যাপক শামিম আহমেদ বলেন, আমাদের বিভাগ থেকে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বের টেক জায়ান্ট গুগলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পদচিহ্ন এঁকে দিতে যাচ্ছে শুভ! চারিদিকের হতাশা আর অন্ধকারের মাঝে একটা ভীষণ ভীষণ আনন্দের খবর! মেধার মূল্যায়ন হবেই, হবে!
তিনি আরও বলেন, শুভদের ব্যাচের ফার্স্ট ইয়ারে আমি প্রোগ্রামিং-এর ক্লাশ নিয়েছিলাম, প্রথম ক্লাশে ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পর্বে আমি সাধারণত জানতে চাই, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার সাথে সাথে আর কোন কোন বিষয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রয়েছে। সেই প্রথম ক্লাশে, শুভ জানিয়েছিল, ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড, গণিত অলিম্পিয়াড ও ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে তার স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বেশ কিছু অর্জন রয়েছে। সেদিনই শুভকে নিয়ে আমার মনের ভিতরে একটা স্বপ্নের বীজ রোপিত হয়েছিল, আজ সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে!
এই অধ্যাপক বলেন, শুভকে আমি সবসময় পেয়েছি একজন ‘শিক্ষার্থী’ হিসাবে, ‘পরীক্ষার্থী’ হিসাবে নয়। একটি বিষয়বস্তু সম্পর্কে গভীর এবং পরিষ্কার ধারণা অর্জনের জন্য তার নিরলস পরিশ্রম আমি প্রত্যক্ষ করেছি। জ্ঞান অর্জনের তার স্পৃহা, অর্জিত জ্ঞান দিয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য তার অক্লান্ত প্রয়াস, শুভর আজকের সাফল্যের পিছনের মূল গল্প! শুভর সিজিপিএ ৩.১১। বলাই বাহুল্য, আমাদের প্রাচীন আমলের “পরীক্ষা ও মূল্যায়ন” পদ্ধতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের মেধার সঠিক মূল্যায়ন করতে পারছে না।