November 22, 2024, 9:21 pm
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

ন্যাব্যতা সংকট যমুনায় আটকা পড়েছে ২০ টি জাহাজ

বাকী বিল্লাহ, (পাবনা) জেলা প্রতিনিধি:
  • আপডেটের সময় : শনিবার, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
  • 633 দেখুন

সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী থেকে পাবনার নগরবাড়ি এবং মানিকগঞ্জের আরিচা অংশে যমুনা নদীতে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে নাব্যতা সংকটে যমুনায় মানিকগঞ্জের আরিচা থেকে পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর পর্যন্ত আটটি পয়েন্টে আটকে আছে অন্তত ২০টি পণ্যবাহী জাহাজ। বাঘাবাড়ী ঘাট ও নগরবাড়ি ঘাট বন্দরে স্বাভাবিক ভাবে প্রতিদিন যেখানে ১২ থেকে ১৫টি জাহাজ ভেড়ে এখন সেখানে ৭ থেকে ৮টি করে জাহাজ ভিড়ছে।

জাহাজ ভিড়তে সমস্যা হওয়ায় রাসায়নিক সার ও জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক নিয়ে বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপো ও নৌবন্দরে আসছে। আবার ফিরতি সময়েও একই অবস্থায় বন্দর ছেড়ে যেতে হচ্ছে জাহাজ নিয়ে। এতে পণ্য সরবরাহ কমার পাশাপাশি বন্দরে কর্মরত প্রায় এক হাজার শ্রমিকের মধ্যে চার শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। নাব্যতা সঙ্কট দ্রুত সমাধান করা না হলে এ অঞ্চলের সেচ নির্ভর বোরো আবাদ সার সংকটে ব্যাহত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।

তবে নৌবন্দর গুলো সচল রাখতে ডেজিং কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে পাবনার বেড়া উপজেলার নাকালিয়া বাজার ও পেঁচাকোলা গিয়ে দেখা গেছে, ১৫টি জাহাজ যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়েছে। এছাড়া রাজধরদিয়া, চর-শিবালয় ও নাকালিয়া চরে বিভিন্ন পয়েন্টে আরও অন্তত পাঁচটি জাহাজ আটকে রয়েছে। ওই সব কার্গো জাহাজ রাসায়নিক সার, কয়লা, গম ও চাল নিয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে যাচ্ছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় প্রয়োজনের প্রায় ৮০ ভাগ জ্বালানি তেল ও রাসায়নিক সার বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপো ও নৌবন্দর হয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৫ থেকে ২৭ লাখ লিটার জ্বালানি তেল ও শত শত টন রাসায়নিক সার বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে নদীতে অপ্রত্যাশিত ভাবে দ্রুত পানি নেমে গেছে। এতে নাব্যতা সংকট বেড়ে গেছে। বাঘাবাড়ি নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বাভাবিক ভাবে রাসায়নিক সার ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য নদীতে ১০ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন।

বাঘাবাড়ী থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার নৌপথের মোহনগঞ্জ, পেঁচাকোলা, হরিরামপুর, কল্যাণপুর, চরসাফুল্লা, চরশিবালয়, নাকালিয়া ও রাকসা’সহ ১০টি পয়েন্টে পানির গভীরতা কমে ৭ থেকে ৮ ফুটে দাঁড়িয়েছে। সরু হয়ে গেছে নৌ চ্যানেল। বাঘাবাড়ী বন্দরমুখী রাসায়নিক সার ও জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ মাঝে মধ্যেই যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়ছে। আটকে পড়া জাহাজের রাসায়নিক সার, ক্লিংকার’সহ অন্যান্য পণ্য অর্ধেক খালাস করে ছোট ছোট নৌকায় করে বাঘাবাড়ী বন্দরে আনা হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের জাহাজ প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। এ কারণে বাঘাবাড়ি বন্দরের মালামাল পরিবহনে জাহাজ মালিকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বিআইডব্লিউটি এর সহকারী পরিচালক ও বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের পোর্ট অফিসার সাজ্জাদ রহমান জানান, গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছিল। তখন ড্রেজিং করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। তবে নদীতে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় আবার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, নৌপথের বাঘাবাড়ী থেকে আরিচা পর্যন্ত অংশে নাব্যতা বজায় রাখতে মৌসুমের শুরু থেকেই তিনটি ড্রেজার কাজ করে আসছিল। এখন মোট ৪টি ড্রেজার কাজ করছে। খুব শিগগিরই নাব্যতা সংকটের সমাধান হবে বলে তারা আশা করছেন।

বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে শ্রমিক তদারকির দায়িত্বে থাকা বন্দর সরদার ওহাব আলী জানান, জাহাজ কম ভেড়ায় নৌবন্দরের এক তৃতীয়াংশেরও (তিন ভাগের এক ভাগ) বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। যারা কাজ করছেন, তারাও স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় অর্ধেক মজুরি পাচ্ছেন। বন্দরের ঘাট ইজারাদার আব্দুস সালাম জানান, বছরের এ সময়েই সবচেয়ে বেশি জাহাজ নৌবন্দরে ভেড়ার কথা। অথচ নদীতে নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে যমুনা নদীতে বেড়া উপজেলার পেঁচাকোলা, মোহনগঞ্জ, কাজিরহাট এলাকার বিভিন্ন স্থানে নাব্যতা সংকটে আটকে যাওয়ায় এক সপ্তাহে মাত্র ৬ থেকে ৭টি জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পেরেছে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটির বেশি জাহাজ নৌবন্দরে ভিড়তে পারছে না। যে জাহাজগুলো ভিড়ছে, সেগুলোকে নৌবন্দরের ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার আগে প্রায় অর্ধেক পণ্য ছোট নৌযানে খালাস করে ভেড়াতে হচ্ছে। এতে পণ্য পরিবহনের খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পরিবহন ঠিকাদারেরা পণ্য পরিবহনে নগরবাড়ী ঘাটসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌঘাট বেছে নিচ্ছেন। ফলে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরটিতে জাহাজের সংখ্যা কমে গেছে।

এভিএম ফয়সাল শিপিংয়ের চালক জানান, পণ্য বোঝাই জাহাজ গুলো আরিচা পর্যন্ত নির্বিঘ্নে আসতে পারছে। কিন্তু এর পরে বেড়া উপজেলার নতিবপুর, ব্যাটারির চর, নাকালিয়া, পেঁচাকোলা ও মোহনগঞ্জ এসে বিপদে পড়ছে। এসব স্থানে যমুনা নদীর গভীরতা ৭-৮ ফুটে নেমে এসেছে। অথচ পণ্য বোঝাই জাহাজ চলাচলের জন্য কমপক্ষে ১০ ফুট গভীরতার প্রয়োজন। তাই জাহাজ গুলোকে দৌলতদিয়ায় নোঙর ফেলে ট্রলারসহ বিভিন্ন ছোট নৌযানে আংশিক পণ্য খালাস করে তারপর নৌবন্দরে আসতে হচ্ছে। এতে এক দিকে পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়ছে তেমনি সময়ও লাগছে বেশি। বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অফিসের সহকারী পরিচালক ফরিদুল ইসলাম জানান, রাসায়নিক সার ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য ১০ থেকে ১১ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে এ নৌপথে কোথাও কোথাও ৮ থেকে ৯ ফুট পানি রয়েছে। তবে ড্রেজিং কাজ চলছে। খুব শিগগিরই সমস্যা কেটে যাবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102