পটুয়াখালীর গলাচিপায় গোলখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মৃত মজিদ মৃধার ছেলে প্রতিবন্ধী আনেচ (৪৫)। তিনি জন্ম থেকেই বাক প্রতিবন্ধী ও শ^াসকষ্টের রোগী। জীবনের চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে ও অসহায় অবস্থায় কাটাতে হয় যাকে প্রতিটি ক্ষন, প্রতিটি মুহূর্ত। তার রয়েছে এক স্ত্রী ও দুই সন্তান। নিজের সংসার নিজেই পরিচালনা করেন। স্ত্রী পরের বাড়িতে ঝি এর কাজ করেন। পেশায় আনিচ একজন ভিক্ষুক।
ভিক্ষা করে অভাব নামের সংসারটি পরিচালনা করেন। প্রতিদিন সকাল হলেই নেমে পড়েন মানুষের কাছে হাত পেতে কিছু নিয়ে তা দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য। জীবনের অদ্ভুত নিয়ম, সুখ কী জিনিস তা হয়ত প্রতিবন্ধী আনেচ কোনদিন কল্পনাও করতে পারে নি। কিন্তু এই পৃথিবীতে সুখ কে না চায়? প্রতিবন্ধী আনেচ যার নিজের বলতে কিছুই নাই। না আছে এক খন্ড জমি, না আছে মাথা গোঁজার একটু ঘর। পরের জায়গা, পরের জমি, পরের ঘর, এটাই তার সম্বল। একজন ভিক্ষুকের কী বা থাকতে পারে? দিন আনে দিন খায় এটাই তার নিত্য দিনের সঙ্গী। কোন দিন ভিক্ষার খাবার, টাকা না জুটলে না খেয়েও পার করতে হয় জীবন। বয়সের ভারে আজ অনেকটা নুয়েও পরেছেন প্রতিবন্ধী আনেচ। কথাগুলো বলছিলেন প্রতিবন্ধী আনেচের স্ত্রী মোমেলা বেগম।
আগের মত মানুষের থেকে ভিক্ষাও পান না ঠিক মত। আনেচের স্ত্রী মোমেলা বেগম বলেন, আমি মানুষের বাসায় কাজ করে যে খাবার নিয়ে আসি তা দিয়ে চলে স্বামী, সন্তান ও নিজের খাবার। এদেশে এখনো মানুষ এতটা কষ্ট ও অসহায়ত্ব জীবন যাপন করে সত্যিই বড় অকল্পনীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন এদেশে একটি লোকও গৃহহীন থাকবে না। মানবতার নেত্রীর যেই কথা সেই কাজ। তারই প্রক্রিয়া ধারায় বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সারা বাংলাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ৬০ হাজার ঘরের বরাদ্দ দিয়েছেন।
প্রতিবন্ধী আনেচের স্ত্রী মোমেলা বেগম বলেন, আমাদের ঘর বাড়ি জায়গা জমি কিছুই নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ থেকে আমাদেরকে যদি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় আমি সারা জীবন আল্লাহর নিকট ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকব। আর কিছু হোক বা না হোক একটি ঘরে পেলে হয়ত স্বামী সন্তানদের নিয়ে থাকার মত জায়গা হতো। কথাগুলো বলে মোমেলা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
ইউপি সদস্য মহিম মোল্লা বলেন, বাক প্রতিবন্ধী আনেচ ও তার স্ত্রী আসলেই অসহায় জীবন যাপন করছে। তাদের জায়গা জমি, ঘর বাড়ি কিছুই নাই। তারা যদি একটি ঘর পায় তাহলে হয়ত পরিবারটির একটু মাথা গোঁজার মত ঠাঁই হবে। গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আসলেই ওরা গরীব এবং অসহায়। ওদের একটা সরকারি ঘরের প্রয়োজন। একটি ঘর পেলে সুন্দরভাবে জীবন গড়তে পারে অসহায় পরিবারটি।