আমি তোরে মাইরা ফালামু’ শেরপুরের নকলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা.রবিউল আক্রাম নামে এক চিকিৎসককে এভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন অ্যাম্বুলেন্সচালক হীরা। তখন তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর তাকে বদলি করা হয় ময়মনসিংহের নান্দাইলে। কিন্তু গত চার মাস পার হলেও এখনো নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। এক ধরনের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে এ ধরনের কথা অকপটে এই প্রতিনিধির সাথে স্বীকার করেছেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ড. শাহ আলম। তিনি বলেন, তিনি জয়েন না করলে আমি কীভাবে তাকে খুঁজে বের করবো?
শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে চাকরি করেছেন রুহুল আমীন হীরা। দীর্ঘ ২৮ বছর চাকরি করলেও কখনো বদলি হননি। এই অবস্থায় গত ৭ ডিসেম্বর নতুন কর্মস্থল ময়মনসিংহের নান্দাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হলেও গত চার মাসেও কাজে যোগ দেননি। জানা যায়, ওই সময় সেখানে চিকিৎসক ছিলেন মো. রফিকুল আক্রাম (বর্তমানে সালনায় কর্মরত)। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছরের ২৯ অক্টোবর অফিসেই তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন অ্যম্বুলেন্সচালক হীরা। এ ঘটনায় শাস্তি হিসেবে তাকে বদলি করা হয়। এ ব্যাপারে চিকিৎসক রবিউল ইসলাম আক্রাম বলেন, আমি ওখানে থাকলে হীরা আমার ক্ষতি করে ফেলত। তাই বদলি হয়ে চলে এসেছি সালনায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৯ নভেম্বর থেকে গাড়ি চালকের পদটি শূন্য হয়। এরপর থেকে বহিরাগত চালক দিয়ে কোনমতে অ্যাম্বুলেন্সের কাজ চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় গত ৭ ডিসেম্বর পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ময়মনসিংহ থেকে নকলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাড়িচালক রুহুল আমীন হীরাকে বদলি করা হয় নান্দাইলে। নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও)
ডা. মাহমুদুর রশিদ জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর ওই গাড়িচালক নতুন কর্মস্থল নান্দাইলে এসে তার কাছে যোগদান করতে আসেন। এ সময় গাড়িচালক শর্তজুড়ে দেন, তাকে তার ইচ্ছামতো ছুটি দিলেই তিনি এখানে যোগ দেবেন। এ প্রস্তাবে তিনি রাজি না হয়ে উল্টো তাকে চাকুরি করতে হলে এখানে বাসাবাড়ি নিয়ে থাকতে হবে বললে ক্ষুব্ধ গাড়িচালক হীরা চলে যান। এরপর আর আসেননি। এ অবস্থায় তিনি যোগদান না করায় কর্তৃপক্ষ বরাবর বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হীরা বলেন, চাকরি করলে নকলাতেই করবো। এখানে আমার সব আছে। তবে ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ড. শাহ আলম বলেন, চাকরি করলে তাকে নান্দাইলে যেতে হবে। জানা গেছে, বদলি হলেও এখনো হীরা নকলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ কোয়ার্টারেই বসবাস করছেন। তাই তার অনেক ক্ষমতা-না থাকলে দীর্ঘদিন একইভাবে সরকারি নির্দেশ-অমান্য করে এভাবে চাকরি করছে কোন ক্ষমতা-বলে!