সশস্ত্র বাহিনী দিবসে আরও বেশি সহিংস হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর অনবরত গুলি চলছে। শনিবার (২৭ মার্চ) এক দিনেই ৯১ জনকে হত্যা করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়ার দিনেই দেশটিতে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে।
এর আগেই গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ার করে দেয় সেনা সরকার। বিক্ষোভকারীদের মাথা কিংবা পিঠে গুলি লাগতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
ওই সতর্কতা উপেক্ষা করে ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় ছাড়াও বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। ইয়াঙ্গুনের ডালা এলাকায় একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালালে অন্তত চারজন নিহত হয়। ওই সময় আরও অন্তত দশজন আহত হয়েছে।
মান্দালে কমপক্ষে ২৯ জন মারা যায়। যার মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছরের কম বয়সী একটি শিশু বলে জানায় স্থানীয় গণমাধ্যম। ইয়াঙ্গুনে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাউ। এছাড়া ইনসেইন জেলায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে একজন স্থানীয় অনূর্ধ্ব ২১ ফুটবল দলের সদস্য রয়েছেন।
এছাড়া পূর্বাঞ্চলীয় লাশিও, বাগিও এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হোপিন শহর থেকেও বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মিয়ানমার নাউ জানিয়েছে, শনিবার (২৭ মার্চ) এখন পর্যন্ত অন্তত ৯১ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাগাইং অঞ্চল, পূর্বে লশিও, ইয়াঙ্গুনের নিকটবর্তী বাগো অঞ্চলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। রাবার বুলেটে এক বছর বয়সী শিশু চোখে আঘাত পেয়েছে বলে জানা যায়।
মিয়ানমারে নিযুক্ত ইইউ প্রতিনিধি বলেন, ‘মিয়ানমারের ৭৬তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস, সন্ত্রাস ও অসম্মানের দিন হিসেবে খোদাই থাকবে।’
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত বিক্ষোভকারীর সংখ্যা চার শ’ ছাড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ গুলিতে এবং তাদের এক-চতুর্থাংশের মাথায় গুলি করা হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সে দেশের সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ তার দলের শীর্ষ নেতাদের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত শহর-নগরগুলোয় সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সূত্র : রয়টার্স