হঠাৎ বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড গাইবান্ধার জনপদ। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিন নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা গ্রামের মোস্তাফুর গ্রামের গোফফার রহমান এবং ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা দোয়ারা গ্রামের ছোলায়মান মিয়ার স্ত্রী ময়না বেগম (৪০)। ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া কাতলামারি গ্রামের বিটুল মিয়ার স্ত্রী শিমুলী আক্তার (২৭)।
আজ রবিবার বেলা তিনটার দিকে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও পলাশবাড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় হঠাৎ শুরু হওয়া ঝড়ে ঘরবাড়ি-গাছপালা ভেঙে পড়লে তারা নিহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন। তিনি জানান, হঠাৎ বয়ে যাওয়া দমকা হাওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে পড়াসহ ধানের জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাতাসে গাছ ভেঙে পড়ায় সুন্দরগঞ্জ ও পলাশবাড়ি উপজেলায় দুই নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ঝড়ে বিভিন্ন সড়কে ভেঙে পড়া গাছ অপসারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে গাইবান্ধার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও পলাশবাড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রচন্ড গতির বাতাসে কাঁচা-পাকা ঘর ভেঙে পড়াসহ উড়ে গেছে টিনের চালা। এ ছাড়া আমের মুকুল, লিচু ও জমির আমন ধানের গাছসহ বিভিন্ন জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও গাছ ভেঙে সড়কের ওপরে পড়ায় যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
আজ রবিবার বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে ছিল দমকা বাতাস। সেই সঙ্গে কোনো কোনো এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের খবরও পাওয়া গেছে। বাতাসের পর পরেই বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার স্টেশন রোড, ট্রাফিক মোড়, বাংলাবাজারসহ শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও পাড়া মহল্লায় প্রবাহিত হয় দমকা হাওয়া। এতে অনেক কাঁচা-পাকা ঘর ভেঙে পড়াসহ টিনের চালা উড়ে গেছে। বসতবাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের দুই পাশের ছোট-বড় বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে পড়েছে। স্থানীয় হাসেম বাজার এলাকায় একটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ হয়ে আছে।
একই অবস্থা সাদুল্লাপুর উপজেলায়ও। প্রচন্ড ঝোড়ো বাতাস আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে উপজেলা শহর, কাজিবাড়ি, জয়েনপুর, জামুডাঙ্গাসহ বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি আর গাছপাল সড়কে উপড়ে পড়েছে।
এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ, ধোপাডাঙ্গা, ফুলছড়ি, গজারিয়া, পলাশবাড়ি, বেতকাপাসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।